কেননা মাত্র এক মাসের ব্যবধানে নাটোরে করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ১০৪ জন যা উদ্বিগ্নে ফেলে দিয়েছে নাটোরবাসীদের।
এ বিষয়ে জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ বলছে, নাটোরে নমুনা পরীক্ষার জন্য পিসিআর মেশিন, সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাই ও আইসিইউ বেড সঙ্গে ভেন্টিলেটর চেয়ে আবেদন করেছেন তারা। এগুলো পাওয়া গেলে প্রতিদিন এখনকার তুলনায় অন্তত তিনগুণ পরীক্ষা বেশি করা যাবে।
সিভিল সার্জন ডাক্তার মিজানুর রহমান জানান, ২৮ মার্চ থেকে নমুনা সংগ্রহ শুরুর পর, জেলায় প্রথম করোনা শনাক্ত হয় ২৯ মার্চ। এরপর ১২ মে পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয় ১২ জনের। ২৬ মে পর্যন্ত নাটোরে করোনা রোগী ছিল ৫১ জন। এখন পর্যন্ত পরীক্ষার ফলাফলে ১৫৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ফলোআপ পজিটিভ ৫টি আর নেগেটিভ এসেছে দুই হাজার ৮৪৫টি। মৃতব্যক্তি মোট চার জনের নমুনা সংগ্রহের পর একটি নমুনা পজিটিভ এসেছে।
পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, জেলার বিভিন্ন প্রবেশপথে দিন-রাত পুলিশি চেকিং চলছে। মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করার জন্য সব চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।
জেলা প্রশাসক শাহরিয়াজ জানান, নাটোরবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মানা ও শতভাগ মাস্ক ব্যবহারে বাধ্য করতে সব অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কাজ করছে প্রশাসন। জেলা সদর এমনকি উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত বিনামূল্যে মাস্ক প্রদানের পাশাপাশি ৮-১০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করছে। জেলায় করোনা সংক্রমণরোধে করোনা প্রতিরোধপক্ষ পালন করা হচ্ছে। এরপরেও সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ বিষয়ে নিয়মিত আলোচনা, পর্যালোচনা ও পরিকল্পনা চলছে।
সিভিল সার্জন ডা. মিজানুর রহমান জানান,নাটোরের নমুনা পরীক্ষার জন্য রাজশাহীতে পাঠাতে হয়। অথচ নাটোরে এই পরীক্ষার ব্যাবস্থা করা গেলে পরীক্ষার হার অনেক বাড়বে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অন্য জায়গা থেকে নাটোরে একজন ভাইরোলোজিস্ট ও একজন ল্যাব টেকনিশিয়ান নাটোরে নিয়োগ দিয়ে যদি অন্তত এক শিফটেও নমুনা পরীক্ষা করা যায় তবে সময় লাগবে মাত্র ৬ ঘণ্টা। এই সময়ে অন্তত ৯৪টি নমুনা পরীক্ষা করা যাবে, যা বর্তমান সংখ্যার প্রায় ৩ গুণ।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে সিভিল সার্জন জানান, জেলার সীমান্তবর্তী সিংড়া, বড়াইগ্রাম, গুরুদাসপুর, লালপুর ও সদর উপজেলার কাফুরিয়া এলাকাগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব এলাকায় বেশ কিছু ওয়ার্ডকে রেডজোন হিসেবে চিহ্নিত করা যায় কিনা তার প্রস্তাবনা জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠিয়েছেন। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হলে তা বাস্তবায়ন করা হবে।
জেলা সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সদস্য বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি জেলা শাখার সভাপতি ও সদর উপজেলার দিঘাপতিয়া এমকে অনার্স কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক জানান, করোনা মোকাবিলায় দ্রুত নমুনা পরীক্ষার কোনও বিকল্প নাই। পাশাপাশি বেশি সংক্রমিত এলাকাগুলোকে চিহ্নিত ও লকডাউন করা গেলে সংক্রমণ কমিয়ে আনা সম্ভব। এক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্যবিভাগ, প্রধানমন্ত্রী ও সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সবার আশু পদক্ষেপ কামনা করেন তিনি।