৪০ গ্রামের মসজিদে মসজিদে ঈদ জামাত, মানা হয়নি স্বাস্থ্যবিধি

চাঁদপুরের ৪০টি গ্রামে ঈদুল আজহা উদযাপনসৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে চাঁদপুরের ৪০টি গ্রামে উৎসবমুখর পরিবেশে আজ উদযাপিত হচ্ছে ঈদুর আজহা। করোনাভাইরাসের কারণে এবার  এসব গ্রামের ঈদগাহে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত না হলেও স্থানীয় প্রতিটি মজিদেই হয়েছে ঈদ জামাত। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের জামাত করার কথা থাকলেও অনেক মসজিদেই যথাযথভাবে মানা হয়নি সামাজিক দূরত্ব। এছাড়া মসজিদে মুসল্লিদের বেশিরভাগের মুখেই ছিল না মাস্ক। করোনাভাইরাসের ভয়কে তোয়াক্কা না করে অনেকে করেছেন কোলাকুলিও।চাঁদপুরের ৪০টি গ্রামে ঈদুল আজহা উদযাপন

শুক্রবার (৩১ জুলাই) হাজীগঞ্জের সাদ্রা দরবার শরীফ সংলগ্ন বায়তুল মামুর জামে মসজিদে সকাল পৌনে ৮ টায় ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ঈদের নামাজে ইমামতি করেন সাদ্রা রহমানিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা কাউছার হামিদ নেছারী। এ সময় শতাধিক মুসল্লি ঈদের জামায়াতে অংশ নেন। এছাড়া ভিন্ন ভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। নামাজ শেষে দেশের শান্তি কামনায় মোনাজাত পালন করা হয়। পরে পশু কোরবানি করেন সামর্থ্যবানরা।

এই দরবারের বর্তমান পীর মো. আরিফ চৌধুরী বলেন, ‘এই দরবারের প্রতিষ্ঠাতা পীর মাওলানা ইসহাক সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে একদিন আগে রোজা ও ঈদ পালনের রেওয়াজ চালু করেন। ১৯৩১ সাল থেকে সাদ্রা মাদ্রাসায় আমার দাদা এবং তার মৃত্যুর পর আমার বাবা ঈদ জামায়াতের ইমামতি করেছেন। বাবার মৃত্যুর পর থেকে আমি এর দায়িত্বে রয়েছি। এ বছর করোনাভাইরাসের কারণে এবার ঈদের জামায়াত ভাগ করে দিয়েছি।’চাঁদপুরের ৪০টি গ্রামে ঈদুল আজহা উদযাপন

শুক্রবার ঈদ উদযাপিত হওয়া চাঁদপুরের গ্রামগুলোর মধ্যে রয়েছে হাজীগঞ্জ উপজেলার বলাখাল, শ্রীপুর, মনিহার, বরকুল, অলীপুর, বেলচোঁ, রাজারগাঁও, জাকনি, কালচোঁ, মেনাপুর, ফরিদগঞ্জ উপজেলার শাচনমেঘ, খিলা, উভারামপুর, পাইকপাড়া, বিঘা, উটতলী, বালিথুবা, শোল্লা, রূপসা, বাশারা, গোয়ালভাওর, কড়ইতলী, নয়ারহাট, মতলবের মহনপুর, এখলাসপুর, দশানী, নায়েরগাঁও, বেলতলীসহ কচুয়া ও শাহরাস্তির বেশ কয়েকটি গ্রাম।চাঁদপুরের ৪০টি গ্রামে ঈদুল আজহা উদযাপন

জানা গেছে, ১৯২৮ সালে হাজীগঞ্জ রামচন্দ্রপুর মাদ্রাসার তৎকালীন অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক আরব দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপনের উদ্যোগ নেন। কিন্তু স্থানীয়দের অসহযোগিতার মুখে তা ভেস্তে যায়। সরকারি নিয়মের বাইরে গিয়ে একদিন আগে ঈদ পালনের উদ্যোগ নেওয়ায় অধ্যক্ষের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় তাকে। ওই বছরই নিজ গ্রাম সাদ্রায় ফিরে আসেন তিনি। 

ধনী ও প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান মাওলানা ইসহাক ওই বছরই নিজ গ্রামে ফিরে একই উদ্যোগ নিয়ে গণসংযোগ শুরু করেন। গ্রামের অসহায় ও দুঃস্থদের আর্থিক সাহায্য দিয়ে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদসহ সব ধরনের ধর্মীয় অনুষ্ঠান উদযাপন প্রথা চালু করেন। পরে তিনি দরবার শরীফ ও মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন।