ওসি প্রদীপ সহযোগিতা চাওয়ায় তাকে এসকর্ট দেওয়া হয়েছে: সিএমপি

ওসি প্রদীপ কুমার দাশ

সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় আত্মসমর্পণ করতেই টেকনাফ থানা থেকে প্রত্যাহার হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশকে কক্সবাজার নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ওসি প্রদীপ যাতে পালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য তাকে পুলিশ পাহারায় কক্সবাজার নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) মির্জা সায়েম মাহমুদ। তবে পালিয়ে যাওয়া নয়, নিরাপদে যাওয়ার জন্য ওসি প্রদীপ সহযোগিতা চাওয়ায় তাকে এসকর্ট দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সিএমপির অপর সূত্র।

বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ওসি প্রদীপ কুমার দাশ চিকিৎসা নিতে সিএমপি পুলিশ লাইনে আসেন। এরপর তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বিষয়টি জানার পর তিনি ওই মামলায় আত্মসমর্পণ করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি সহযোগিতাও চেয়েছেন। এ কারণে তাকে পুলিশ হেফাজতে কক্সবাজার নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নগর পুলিশের একটি টিম তাকে নিয়ে আদালতের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। সেখানে গিয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন তিনি।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে নগর পুলিশের  অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম ও অপারেশন) শ্যামল কুমার নাথ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রদীপ কুমার দাশের বিরুদ্ধে কক্সবাজার আদালতে মামলা দায়েরের পর আদালতে আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নেন। সেই অনুযায়ী তিনি আমাদের কাছে তাকে আদালত পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার জন্য সহযোগিতা চেয়েছেন। সেই কারণে আমরা তাকে এসকর্ট দিয়ে আদালতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ওসি প্রদীপ বাড়তি কোনও সহযোগিতা পাননি। একজন সাধারণ নাগরিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সহযোগিতা চাইলে তাকেও আমরা একই সহযোগিতা করতাম। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে কেউ আত্মসমর্পণ করতে চাইলে তাকে সহযোগিতা করাই পুলিশের কাজ।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (৩১ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর সিনহা রাশেদ খান। এ ঘটনায় চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে প্রধান করে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন ও নিরাপত্তা বিভাগ। একইভাবে তদন্তের স্বার্থে টেকনাফের বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ লিয়াকত আলীসহ ১৬ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এদিকে, এ ঘটনায় ৫ আগস্ট দুপুরে দণ্ডবিধি ৩০২, ২০১ ও ৩৪ ধারায় টেকনাফের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন মেজর সিনহার বড়বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। মামলাটি ওইদিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে টেকনাফ থানায় হত্যা মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। যার মামলা নং সিআর-৯৪/২০২০।

ওসি প্রদীপ ও বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ লিয়াকত ছাড়াও এ মামলায় এসআই নন্দলাল রক্ষিত, এসআই টুটুল, এএসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন ও কনস্টেবল মো. মোস্তফাকে আসামি করা হয়েছে।

তবে মামলা দায়েরের আগে গত ৪ আগস্ট  অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে থেকে ছুটিতে যান ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। আজ বৃহস্পতিবার তিনি সিএমপিতে চিকিৎসা নিতে আসেন।