পুলিশকে থাপ্পড় মেরে ভাইকে ছাড়িয়ে নিলেন ইউপি চেয়ারম্যান

শরীয়তপুর

মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে থাপ্পড় মেরে নিজের ভাইকে ছাড়িয়ে নিয়েছেন শরীয়তপুর সদর উপজেলার শৌলপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইয়াছিন হাওলাদার। সোমবার বিকালে শৌলপাড়ায় ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় চেয়ারম্যান ও তার ভাই মোজাম্মেল হাওলাদারসহ সাত জনকে আসামি করে মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) সকালে পালং মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পালং মডেল থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার শৌলপাড়া ইউনিয়নের মৃত গণি হাওলাদারের স্ত্রী করিমন নেছার দায়ের করা একটি মারধরের অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব পান চিকন্দী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই ফারুক আহমেদ। সোমবার বিকালে অভিযোগটি তদন্তের জন্য তিনি শৌলপাড়া এলাকায় যান। এসময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইয়াছিন হাওলাদারের ভাই মোজাম্মেল হাওলাদার তদন্ত কর্মকর্তার সামনেই অভিযোগকারি করিমন নেছাকে মারধর করেন। তদন্ত কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ তাৎক্ষণিকভাবে মোজাম্মেল হাওলাদারকে আটক করলে ইউপি চেয়ারম্যান ইয়াছিন হাওলাদার তার ভাইকে ছেড়ে দিতে বলেন। কিন্তু ছাড়তে রাজি না হওয়ায় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান ইয়াছিন হাওলাদার তদন্ত কর্মকর্তাকে থাপ্পর মারেন এবং ভাইকে ছাড়িয়ে নিয়ে চলে যান। ঘটনার পর থেকে দুজনেই আত্মগোপনে আছেন।

এই ঘটনায় তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ফারুক আহম্মেদ বাদী হয়ে মঙ্গলবার সকালে পালং মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় শৌলপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইয়াছিন হাওলাদার এবং তার ভাই মোজাম্মেল হাওলাদারসহ সাত জনকে আসামি করা হয়েছে।

চিকন্দী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ফারুক আহমেদ বলেন, 'পালং থানার নির্দেশে একটি অভিযোগের তদন্ত করতে এলাকায় যাই। স্থানীয়দের থেকে তথ্য সংগ্রহের সময় আমার উপস্থিতিতেই চেয়ারম্যানের ভাই বাদীকে মারধর করে। আমি তাৎক্ষণিকভাবে চেয়ারম্যানের ভাইকে আটক করলে চেয়ারম্যান আমার সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে এবং চর-থাপ্পড় মেরে আসামিকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে।'

এ বিষয়ে শৌলপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইয়াছিন হাওলাদারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি থাপ্পড় মারার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, 'ঘটনাস্থলে একটু উত্তেজনা সৃষ্টি হওয়ায় ভাইকে নিয়ে চলে আসি। তদন্ত কর্মকর্তার গায়ে হাত দেওয়ার মতো কোনও ঘটনা সেখানে ঘটেনি।'

পালং মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আসলাম উদ্দিন বলেন, 'একটি মানসিক প্রতিবন্ধী ছেলেকে মারধর করার ঘটনায় ছেলের মা করিমন নেছা পালং মডেল থানায় অভিযোগ করেন। বিষয়টি তদন্ত করতে গেলে চেয়ারম্যান ও তার ভাইয়েরা মিলে তদন্ত কর্মকর্তার গায়ে হাত দিয়ে সরকারি কাজে বাধা প্রদান করেন। এই ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। হামলাকারীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।'