মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরির জন্য স্ত্রীকে বানান আপন বোন!




জামালপুরমুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বানাতে স্ত্রী ও খালাতো বোনকে বানানো হয়েছে আপন বোন। জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার মেরুরচর ইউনিয়নের রবিয়ার চর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সহিদুর রহমানের ছেলে স্কুলশিক্ষক আশরাফুল আলমের বিরুদ্ধে এ জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয়রা জানান, আশরাফুল আলম বর্তমানে বকশীগঞ্জ উপজেলার মাদারের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। আর মুক্তিযোদ্ধা কোঠায় চাকরি পেয়ে আশরাফুলের স্ত্রী নাসরিন আক্তার খেয়ার চর ও খালাতো বোন শাপলা আক্তার টুপকার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন।

শিক্ষা অফিস থেকে পাওয়া কাগজপত্র যাচাই করে দেখা যায়, আশরাফুল, নাসরিন ও শাপলা তিন জনই ২০১৬ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পান। আশরাফের স্ত্রী নাসরিন ও খালাতো বোন শাপলার জন্মসনদসহ বিভিন্ন কাগজপত্রে বাবা হিসাবে মুক্তিযোদ্ধা সহিদুর রহমানের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ জন্য নাসরিন ও শাপলা মেরুরচর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) থেকে প্রত্যয়নপত্র ও জন্মসনদও সংগ্রহ করেছেন।

তবে ওই ইউপির তৎকালীন চেয়ারম্যান গোলাম মওলা বলেন, মুক্তিযোদ্ধা সহিদুর রহমানকে আমি চিনি। তবে তার কত জন সন্তান, তা আমার জানা ছিল না। এ সুযোগে আশরাফুল নিজের স্ত্রী ও খালাতো বোনকে নিজের আপন বোন বানিয়ে প্রতারণা করেছেন বলে দাবি করেন তিনি।

অপরদিকে চাকরির দেওয়ার কথা বলে আশরাফুল ওই এলাকার অনেক মানুষের থেকে টাকা নিয়ে বর্তমানে পলাতক রয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা আরও জানান, রবিয়ার চর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সহিদুর রহমান তার শালিকার মেয়ে নাসরিন ও শাপলাকে পালিত কন্যা হিসাবে নিজ বাড়িতে লালন পালন করেছেন। পরে নাসরিনকে তার ছেলে আশরাফুলের সঙ্গে বিয়ে দেন। সেক্ষেত্রে নাসরিনের পালিত পিতা হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা সহিদুর রহমান তার পিতা। সেই হিসেবে বোন শাপলাও মুক্তিযোদ্ধা সহিদুর রহমানের কন্যা হিসেবে মুক্তিযোদ্ধার কন্যা। এ বিষয়ে কিছুদিন আগেও তদন্ত হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আশরাফুলের খালাতো বোন শাপলা আক্তার বলেন, আমার চাকরি মুক্তিযোদ্ধা কোঠায় হয়েছে কিনা, তা আমার জানা নেই।

আর আশরাফুলের মোবাইলফোনে বার বার কল করেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। রবিয়ার চর গ্রামে আশরাফুলের বাড়িতে গিয়েও তার পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি।