ইউএনও’র ওপর হামলার ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্যের কমিটি

ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমদিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখের ওপর হামলার ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) জাকির হোসেনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার।

বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবু সালেহ মো. মাহফুজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন রংপুর ডিআইজির একজন প্রতিনিধি এবং দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আসিফ মাহমুদ।

এদিকে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের শরীরের ডান সাইড প্যারালাইজড হয়ে গেছে। রাতে বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স অ্যান্ড হসপিটালের যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক ডা. বদরুল আলম। তিনি রাত ৯টার দিকে জানান, তারা দ্বিতীয়বারের মতো ওয়াহিদা খানমকে অস্ত্রোপচার কক্ষে নিচ্ছেন।

তিনি বলেন, ‘আঘাত অত্যন্ত গুরুতর। মাথায় এমনভাবে আঘাত করা হয়েছে যে খুলির হাড় ভেঙে মস্তিষ্কের ভেতরে ঢুকে গেছে। এ কারণে রক্তক্ষরণ হয়েছে এবং শরীরের ডান পাশ প্যারালাইজড হয়ে গেছে।’

রংপুর মেডিক্যালে ওয়াহিদা খানমের অবস্থা খারাপের দিকে গেলে বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে তাকে ঢাকায় আনা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমের সরকারি বাসভবনএদিকে বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম, পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন, বিরামপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মিথুন সরকার, হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুর রাফিউল আলম ও নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুন নাহারসহ র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন এবং সিআইডি ও ডিবির পৃথক দল সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করেন। পরে এ নিয়ে তারা বৈঠক করেন। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বৈঠক শেষে দলটি আবারও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এছাড়া দিনাজপুর-৬ আসনের এমপি শিবলী সাদিকও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

সূত্র জানায়, সিসিটিভির ফুটেজে হামলার সঙ্গে দু’জনকে জড়িত থাকতে দেখা গেছে। তারা দু’জনেই পিপিই পরা ছিল। তবে মই বেয়ে ভেনটিলেটর দিয়ে একজন বাসায় প্রবেশ করে। সে এক ঘণ্টার মতো সেই রুমে অবস্থান করেছিল বলেও ফুটেজে দেখা গেছে।

তবে পুলিশের রংপুর বিভাগের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য জানান, বাসায় দু’জন প্রবেশ করেছিল। একজন ছিল পিপিই পরা। তবে সংখ্যাটা দু’জন নাকি আরও বেশি তা যাচাই করা হচ্ছে। ওই বাসার সব সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হচ্ছে।

এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ইউএনওকে ঢাকায় আনা হয়প্রসঙ্গত, বুধবার রাত দুইটার দিকে সরকারি বাসভবনের ভেনটিলেটর ভেঙে প্রবেশ করে ইউএনও ও তার বাবার ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। তাদের উভয়ের শরীর ও মাথায় আঘাত রয়েছে। ইউএনওর বাবা ওমর আলী শেখ প্রতিদিন সকালে হাঁটাহাঁটি করেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে তিনি বাড়ি থেকে হাঁটার জন্য বের না হওয়ায় তার সঙ্গীরা খোঁজ নিতে আসেন। বাড়িতে এসে ডাকাডাকি করে কোনও সাড়া না পেয়ে পুলিশে খবর দেন তারা। পরে পুলিশ এসে ইউএনও ও তার বাবাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ঘটনার সময় প্রহরীকে একটি ঘরে বেঁধে রাখা হয়েছিল বলে জানা গেছে। বর্তমানে ইউএনওর বাবা ও বাসার প্রহরী রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

 

আরও পড়ুন:

 

ইউএনও’র ওপর হামলাকারী ছিল পিপিই পরা

ইউএনও ওয়াহিদার সর্বোচ্চ চিকিৎসার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

ইউএনও’র ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশের সব তদন্ত ইউনিট মাঠে: ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য

ইউএনও ওয়াহিদার অবস্থা সংকটাপন্ন, বিদেশে নেওয়ার পরিস্থিতিও নেই

ইউএনও ও তার বাবাকে কুপিয়ে ‘মৃত ভেবে’ ফেলে রেখে যায় হামলাকারীরা

অবস্থা গুরুতর, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে ইউএনও ওয়াহিদাকে

দুর্বৃত্তদের গ্রেফতারে পুলিশ কাজ করছে: জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী

ভেন্টিলেটর ভেঙে বাসায় ঢুকে ইউএনও’র ওপর হামলা

ডান সাইড প্যারালাইজড হয়ে গেছে ওয়াহিদার