ধরলা অববাহিকায় ফের বন্যা, বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে ব্রহ্মপুত্র




পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি নদী এলাকায় ভাঙন তীব্র হয়েছেঅবিরাম বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বেড়েছে। একইসঙ্গে তীব্র হয়েছে নদী এলাকার ভাঙন, প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। ধরলার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে জেলার সদর ও ফুলবাড়ী উপজেলার ধরলা অববাহিকার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, আগামী দুই থেকে তিন দিন জেলার সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। এ অবস্থায় জেলার নদ-নদী অববাহিকার নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করবে।

পাউবো’র নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এদিন দুপুর ১২টা পর্যন্ত ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

অন্যদিকে বুধবার সকাল থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্রের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ৪৫ সেন্টিমিটার এবং চিলমারী পয়েন্টে ৬০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামী দুই একদিনের মধ্যে ব্রহ্মপুত্র বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।

তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ২০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।

কুড়িগ্রাম রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বুধবার দুপুর থেকে জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী আরও চারদিন বজ্রসহ মাঝারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।

নদী ভাঙনের মুখে গাছপালা কেটে বিক্রি করে দিচ্ছেন স্থানীয়রাএদিকে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার অববাহিকায় নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তিস্তার ভাঙনে রাজারহাট ও উলিপুর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের শতাধিক পরিবার এবং ধরলার ভাঙনে সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ও ভোগডাঙা ইউনিয়নে প্রায় অর্ধশত পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে বাস্তুহারা জীবনযাপন করছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

এছাড়াও জেলার নাগেশ্বরী উপজেলায় দুধকুমার নদের ভাঙনে ভিটে হারাচ্ছেন এর তীরবর্তী বাসিন্দারা।

পাউবো কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম জানান, ভারতে ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ায় উজানের ঢলে জেলার নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। ধরলার পানি উজানে কমতে শুরু করলেও আগামী দুই দিন ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থেকে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এতে জেলার চরাঞ্চলসহ নদ-নদী অববাহিকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। তবে পানি দ্রুত নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।