যমুনায় প্রবল স্রোত, বিলীনের পথে প্রাথমিক বিদ্যালয়

ধুনটে যমুনা নদীর পানি বাড়ায় নদীপাড়ের ক্ষেতগুলো তলিয়ে গেছে। ছবিটি রবিবার বানিয়াজান গ্রাম থেকে তোলা। 
বগুড়ার সারিয়াকান্দি ও ধুনট উপজেলায় উজান থেকে নেমে আসা ঢলে যমুনা নদীতে পানি বাড়লেও আবার কমতে শুরু করেছে। রবিববার সকালে যমুনা এখানে বিপৎসীমার ছয় সেন্টিমিটার ওপর থাকলেও এখন বিপৎসীমার নীচে অবস্থান করছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে অভয় দিয়ে বলা হয়েছে, আপাতত তৃতীয় দফায় বন্যার আশঙ্কা নেই।

তবে পানি বাড়ায় নদীতে আবারও প্রবল স্রোত ও ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে।

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবর রহমান জানান, রবিবার সকাল ৬টায় যমুনা নদীতে পানি কমলেও বিপৎসীমার ছয় সেন্টিমিটার ওপরে ছিল। তবে আজ সোমবার বিপৎসীমার নিচে নেমেছে। বাঙালি নদীর পানিও বিপৎসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে যমুনায় পানি বাড়ড়ায় সারিয়াকান্দি ও ধুনট উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অভ্যন্তরের গ্রামগুলোতে নতুন করে বন্যার পানি প্রবেশ করছে। এতে নিম্নাঞ্চলের কৃষকদের ফসলের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। পানি বাড়ায় কোথাও কোথাও গ্রামীণ সড়কগুলোও পানিতে তলিয়ে গেছে। তলিয়ে গেছে নদীবর্তী জমিতে সদ্য বেড়ে ওঠা ধান গাছগুলো।

যমুনা নদীর ভাঙনের মুখে পড়েছে, হাটশেরপুর ইউনিয়নের চর দীঘাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। রবিবার সকালে প্রবল স্রোত ও ঘূর্ণাবর্তে বিদ্যালয় ভবনটির কিছু অংশ নদীতে ভেঙে পড়েছে। যে কোনও সময় পুরো বিদ্যালয় নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

যমুনার স্রোতে ভাঙনের কবলে পড়েছে চর দীঘাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ফ্লাড শেল্টার।

বিদ্যালয়টির পরিচালনা কমিটির সভাপতি বদিউজ্জামান বলেন, ২০০৫ সালে প্রায় ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে দ্বিতল স্কুল ভবন কাম ফ্লাড সেন্টার (বন্যা দুর্গতদের আশ্রয়কেন্দ্র) হিসেবে ভবনটি নির্মাণ করা হয়। বিদ্যালয়টি নদীতে বিলীন হওয়ার খবর পেয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম কবির, সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ইলিয়াস উদ্দিন, মোস্তফা কামাল এবং প্রধান শিক্ষক হাসানুজ্জামান রবিবার দুপুরে এসে পরিদর্শন করেছেন।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম কবির জানান, জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যালয় ভবন নিলামে বিক্রির প্রস্তুতি চলছে।

অন্যদিকে, যমুনা নদী তীরবর্তী দলিকার চর নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে। গত ২-৩ দিনে চরের প্রায় আড়াইশ বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়েছে। বিপুল সংখ্যক মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। চরে বসবাসকারী অন্তত ৩৫০ পরিবার নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ছুটছে। এর আগে গত জুন, জুলাই ও আগস্ট মাসে বন্যায় সারিয়াকান্দি উপজেলায় নদী ভাঙনে চালুয়াবাড়ি ইউনিয়নের সাতটি চর সম্পূর্ণ ও দুটি আংশিক বিলীন হয়েছে। চরগুলো হলো-হাটবাড়ি, আউচারপাড়া, উত্তর শিমুলতাইড়, সুজনেরপাড়া, ধনার চর, কাকালিহাতা, খাবুলিয়ার চর, মানিকদাইড় চর ও পাকুরিয়ার চর।

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান রবিবার জানিয়েছেন, যমুনা নদীতে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বিকাল থেকে পানি নেমে যাবে। তাই নদী তীরবর্তী চরাঞ্চলে তৃতীয় দফা বন্যার আশঙ্কা নেই।