সিনহা হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে সেই শামলাপুরে সমাবেশ

মেজর (অব.) সিনহা হত্যার ঘটনার দুই মাস পূর্তিতে সেই শামলাপুরে মানববন্ধন করেন স্থানীয়রা। নেতৃত্ব দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী।

মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খানের হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে কক্সবাবাজারের টেকনাফের শামলাপুরে সমাবেশ করেছে শত শত মানুষ। এই সমাবেশে নেতৃত্ব দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী। 

(১ অক্টোবর) বৃহস্পতিবার বিকেলে মেজর (অব.) সিনহা হত্যার ঘটনার দুই মাস পূর্তিতে টেকনাফ শামলাপুরের পাশে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে পাঁচ শতাধিকের বেশি মানুষ ব্যানার নিয়ে অংশ নেন। সমাবেশে অংশ নেওয়া লোকজন সেই দিন মেজর (অব.) সিনহার মতো হাত দুটি ওপরে তোলে শ্লোগান দিয়ে হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানায়।

সমাবেশে নাজনীন সরওয়ার কাবেরী বলেছেন, ‘মেজর (অব.) সিনহা হত্যার প্রতিশোধ নয়, বিচারের দাবিতে আমরা এখানে সমাবেত হয়েছি। একজন মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সন্তানকে বিনা কারণে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এই হত্যাকারীদের ফাঁসি দাবি করছি। এখানে ইয়াবা নির্মূলের নামে ঘর থেকে মানুষ তুলে নিয়ে ‘বন্দুকযুদ্ধ’দেখিয়ে তাদের হত্যা করা হয়েছে। এমনকি অনেক মানুষকে মিথ্যা মামলা এবং মাদক দিয়ে ফাঁসানো হয়েছিল। এসব কর্মকাণ্ডে সহায়তা করেছিল জেলা পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন। আমরা তারও বিচার চাই।’

আমরা এখানে প্রতিটি হত্যার বিচার দাবি করছি উল্লেখ করে এই নেত্রী বলেন, ‘গত দুই বছরে এখানে বন্দুকযুদ্ধের নামে অনেক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, সেসব ঘটনা তদন্তের জন্য একটি কমিশন গঠনের অনুরোধ জানাচ্ছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। গত দুইটি বছর উখিয়া-টেকনাফের মানুষের নির্ঘুম রাত কেটেছে ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ভয়ে। এর দায় কি এড়াতে পারবেন স্থানীয় এমপি? ওই দিন মেজর (অব.) সিনহাকে গুলি করেও মারতে পারেনি। একদল দুষ্কৃতকারী পুলিশ পরে লাথি মেরে মৃত্যু নিশ্চিত করেছিল! এখানে যারা সমাবেত হয়েছি আমরা সবাই মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করছি।’ 

মেজর (অব.) সিনহাকে হত্যার দুই মাস পর টেকনাফের শামলাপুরে হত্যাকাণ্ডের সেই স্থলটিতে আওয়ামী লীগ নেত্রী নাজনীন সরওয়ার কাবেরীর নেতৃত্বে মানববন্ধন ও সমাবেশ।

টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান আজিজ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘মেজর (অব.) সিনহা হত্যার ঘটনার দুই মাস পূর্ণ হওয়ায় তার এলাকায় জেলা আওয়ামী লীগের নেত্রী নাজনীন সরওয়ার কাবেরীর নেতৃত্বে হত্যাকারীদের ফাঁসি দাবি জানিয়ে একটি প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়েছে। এতে শত শত মানুষ অংশ নিয়েছে।’

প্রসঙ্গত গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মারিশবুনিয়া পাহাড়ে ভিডিও চিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ির নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সিনহা। এ সময় পুলিশ সিনহার সঙ্গে থাকা সাহেদুল ইসলাম সিফাতকে আটক করা হয়েছিল। ঘটনার পর পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় দু’টি ও রামু থানায় ৩টি মামলা করে। এরপর গত ৫ আগস্ট কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা করেন সিনহা মো. রাশেদ খানের বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। এতে ৯ জনকে আসামি করা হয়। এখন মামলাগুলো তদন্ত করছে র‌্যাব।