এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ধর্ষণ: আদালতে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে ৩ আসামি


ধর্ষণ মামলার তিন আসামি

সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনায় দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে তিন আসামি। শনিবার (৩ অক্টোবর) পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে হওয়া শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, আইনুদ্দিন ও রাজনকে  দুপুর ১টায় আদালতে হাজির করে পুলিশ। প্রায় দুই ঘণ্টা পর তিন জনকে পৃথক আদালতে নেওয়া হয় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য। জবানবন্দি শেষে রাত সাড়ে ৭টার দিকে আদালতের নির্দেশে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়।

আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে তিন আসামিই ধর্ষণের দায় স্বীকার করার পাশাপাশি সেদিন কার-কী ভূমিকা ছিল সেসব তথ্য দিয়েছে। অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক জিয়াদুর রহমানের সামনে রাজন, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতের বিচারক সাইফুর রহমানের সামনে আইনুদ্দিন ও মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতের বিচারক শারমিন খানম নিলার সামনে রনি দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়।

পুলিশ সূত্র জানায়, আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে আসামিরা জানায় ধর্ষণের পরই তারা পালাতে চেষ্টা করে। এসময় তারা প্রাইভেটকারটি থেকে আলামত নষ্ট করার কাজ শুরু করে। ধর্ষণের আগে গৃহবধূকে মারধরও করা হয় বলে তারা জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছে। একইসঙ্গে ধর্ষণের শিকার গৃহবধূর সঙ্গে সাক্ষাৎ, ধর্ষণ ও লুটপাটের সময় কার কী ভূমিকা ছিল সেসব তথ্যও আদালতকে জানায় তারা।

সিলেট মহানগর পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশমনার অমূল কুমার চৌধুরী বলেন, এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনায় তিন আসামি দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। ঘটনার শুরু থেকে কারা নেপথ্যে ছিল সেসবের তথ্যও তারা দিয়েছে।

এর আগে, শুক্রবার এই মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান, অর্জুন লস্কর ও রবিউল ইসলাম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

এদিকে, শনিবার দুপুরে মামলার অপর দুই আসামি তারেকুল ইসলাম তারেক ও মাহফুজুর রহমানকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে হাজির করে তাদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তারা দুজনই পাঁচ দিনের রিমান্ডে রয়েছে। রবিবার (৪ অক্টোবর) তাদের আদালতে হাজির করা হতে পারে বলে জানা গেছে।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, আসামিরা পুলিশের রিমান্ডে থাকাকালে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দেয়। এসময় একজন আরেকজনকে দোষারোপও করে। মামলাটি বেশ আলোচিত ও স্পর্শকাতর হওয়ায় পুলিশ মামলায় কোনও ফাঁক না রাখতে ধর্ষণের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করার জন্য ওসমানী মেডিক্যালে নেয়। তবে প্রাথমিকভাবে পুলিশ নিশ্চিত গ্রেফতার হওয়া সবাই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত।