গৃহবধূ নির্যাতন: দুই আসামি রিমান্ডে

নোয়াখালীতে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের দুটি মামলায় মো. রহিম ও রহমতুল্লাহকে গ্রেফতারের পর আদালতে নেওয়া হয়। 

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে মধ্যযুগীয় কায়দায় স্বামীকে বেঁধে রেখে গৃহবধূকে নিজ ঘরে সংঘবদ্ধভাবে বিবস্ত্র করে মুখমণ্ডলে লাথি মারাসহ নির্যাতনের ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলায় গ্রেফতার দুই আসামির মোট ৬ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আসামিরা হচ্ছে মো. রহিম ও রহমত উল্যাহ। সোমবার তাদের ৩ নম্বর বেগমগঞ্জ আমলি আদালতের বিচারক মাশফিকুল হকের আদালতে হাজির করে দুটি মামলার প্রত্যেকটিতে ৭ দিন করে রিমান্ডের আবেদন জানায় বেগমগঞ্জ থানা পুলিশ। বিচারক রিমান্ড শুনানি শেষে উভয় আসামিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় ৩ দিন এবং পর্নোগ্রাফি আইনে ৩ দিন করে মোট ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

সরকারি রেজিস্ট্রার অফিসার (জিআরও) সহকারী উপ-পরিদর্শক মো. সোহেল রানা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে, ঘটনার ৩৩ দিন পর ৯ জনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ও আইসিটি আইনে সোমবার (৫ অক্টোবর) রাত ১টায় ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে নির্যাতিতা গৃহবধূ (৩৫) বাদী হয়ে দুটি মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত প্রধান আসামিসহ ৪ জনকে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেছে বেগমগঞ্জ থানা পুলিশ ও র‌্যাব-১১।

আজ সোমবার সকালে মামলার প্রধান আসামি বাদলকে ঢাকা থেকে ও স্থানীয় দুর্ধর্ষ দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ারকে নারায়ণগঞ্জ থেকে আটক করে র‌্যাব-১১।

আটক বাদল (২২) একলাশপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য একলাশপুর গ্রামের মোহর আলী মুন্সি বাড়ির ছেলে। আর দেলোয়ার একই গ্রামের কামাল উদ্দিন বেপারি বাড়ির সাইদুল হকের ছেলে।

এর আগে, গতকাল বিকালে একলাশপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের খালপাড় এলাকার হারিধন ভূঁইয়া বাড়ির শেখ আহম্মদ দুলালের ছেলে মো. রহিম (২০) ও রাতে একই এলাকার মোহর আলী মুন্সি বাড়ির মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে মো. রহমত উল্যাহকে (৪১) গ্রেফতার করে বেগমগঞ্জ থানা পুলিশ।

মামলার এজাহারে নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ উল্লেখ করেছেন, দীর্ঘদিন পর গত ২ সেপ্টেম্বর তার স্বামী তার সঙ্গে সাক্ষাৎ ও রাতযাপন করার সময় বাদলের নেতৃত্বে উল্লেখিত আসামিরাসহ আরও ৭/৮ জন লাথি মেরে ঘরের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে। আসামিরা তার স্বামীকে মারধর করে পাশের রুমে নিয়ে বেঁধে রাখে। এরপর টর্চলাইট জ্বালিয়ে তাকে জোরপূর্বক বিবস্ত্র করে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এ সময় পুরো ঘটনা তারা তাদের মোবাইল ফোনে ভিডিও করে। এরপর ঘটনা প্রকাশ করলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে চলে যায়। এ অবস্থায় তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে বোনের বাড়িতে গেলে সেখানেও তাকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আসামিরা তাকে কু-প্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হওয়ায় তারা সে রাতে ধারণ করা ভিডিও ফাঁস করে দেয়। এতদিন তিনি আসামিদের ভয়ে পুলিশের কাছে যাওয়ার সাহস করেননি। তবে পুলিশই খোঁজ নিয়ে তাকে উদ্ধার করলে তিনি সাহস পান এবং তাদের কাছে পুরো ঘটনা প্রকাশ করে এই মামলা করেন।