ভাত রান্নায় দেরি, গৃহবধূকে মারধর করে তালাবদ্ধ রাখার অভিযোগ

দিনাজপুরের হিলিতে ভাত রান্না করতে দেরি হওয়ায় স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি মিলে রোকেয়া বেগম (৩৫) নামের এক গৃহবধূকে মারধর করে বাড়িতে তালাবদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। পরে পুলিশ গিয়ে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

গত ১৯ অক্টোবর বিকালে হিলির সিংড়াপাড়া এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটে। ওই গৃহবধূ এলাকার আলমগীর হোসেনের স্ত্রী।

নির্যাতনের স্বীকার গৃহবধূ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সকালে উঠে রান্নার কাজ করছিলাম, এসময় আমার শ্বশুর সফিকুল ইসলাম মাঠ থেকে ফিরে রান্নার দেরি হয়েছে বলে চিৎকার চেচামেচি করেন। এসময় আমার শাশুড়িকেও তিনি বাক দেন। পরে আমার শাশুড়িও আমাকে গালাগালি করেন। এক পর্যায়ে শ্বশুর আমার গলাটিপে ধরে ও বুকে লাথি মারতে থাকেন। পরে আমার স্বামী আলমগীরও কোনও কিছু না শুনে ঘরে নিয়ে গিয়ে এলোপাতাড়িভাবে মারধর করতে থাকেন। এমনকি বালিশচাপা দিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করেন। পরে আমি যাতে কাউকে নির্যাতনের কথা বলতে না পারি, সেজন্য আমার মোবাইলফোন ভেঙে ফেলে ও ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখে।

তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন। বিভিন্ন সময় তার ওপর এমন নির্যাতন চালানো হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

গৃহবধূর বড় বোন আরজিনা বেগম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, দুপুরে স্থানীয়রা সংবাদ দেয় যে তোমার বোনকে মারপিট করে ঘরে বন্দি করে রেখেছে, বাঁচাতে চাইলে বোনকে উদ্ধার করে নিয়ে আসো। খবর পেয়ে দুপুরের দিকে তার বাড়িতে যাই, এসময় তারা আমাকেও গলা ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে জানিয়ে ও পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. নাজমুস সাঈদ বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, সোমবার দিবাগত রাতে রোকেয়া বেগম নামের ওই গৃহবধূকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাকে তার স্বামী নাকি মারধর করেছিল, তার পায়ে ও গলায় আঘাতের চিহ্ন আছে। বর্তমানে তার অবস্থা ভালো।

হাকিমপুর থানার এসআই বেলাল হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, মারধর করে গৃহবধূকে বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছে, এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে ওই গৃহবধূকে স্বামীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। এখন পর্যন্ত তার ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়া যায়নি, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।