স্টিল মিলে বিস্ফোরণ ঘটনায় মামলা, দুই ব্যবস্থাপকসহ গ্রেফতার ৪

নারায়ণগঞ্জরূপগঞ্জে প্রিমিয়ার স্টিল অ্যান্ড রি-রোলিং মিলে লোহা গলানোর পাত্র বিস্ফোরণের ঘটনায় কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ এনে এক নিহত শ্রমিকের ভাই বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলায় রূপগঞ্জ থানা পুলিশ প্রতিষ্ঠানটির দুই ব্যবস্থাপকসহ চার কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করেছে।

শনিবার (২৪ অক্টোবর) বিস্ফোরণে নিহত ফাহিমের ভাই মাহিম বাদী হয়ে অজ্ঞাত কয়েকজনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ প্রিমিয়ার স্টিল অ্যান্ড রি-রোলিং মিলের জেনারেল ম্যানেজার, প্রোডাকশন ম্যানেজার ও দুই সুপারভাইজারকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান। তিনি জানান, নিহত শ্রমিক ফাহিমের ভাই মাহিম অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। সেই মামলায় প্রিমিয়ার স্টিল মিলের জেনারেল ম্যানেজার, প্রোডাকশন ম্যানেজার ও দুই সুপারভাইজারকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, দুর্ঘটনার পর আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনার কারণে ঘটনাটি ঘটেছে বলে তদন্তে জানা গেছে। কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেছেন নিহত এক শ্রমিকের ভাই। অজ্ঞাত আসামি করা হলেও এই মামলায় কারখানার জেনারেল ম্যানেজার, প্রোডাকশন ম্যানেজার ও দুই সুপারভাইজারকে গ্রেফতার করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত রিমান্ড আবেদনের শুনানি রবিবার (২৫ অক্টোবর) করবেন।

গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটায় রূপগঞ্জ উপজেলার বরপা এলাকায় লোহা প্রস্তুতকারক কারখানা প্রিমিয়ার স্টিল অ্যান্ড রি-রোলিং মিলের (পিএসআরএম) লোহা গলানোর পাত্র ভাট্টির বিস্ফোরণ ঘটে। গলিত লোহা গায়ে পড়ে গুরুতর দগ্ধ হন ছয় শ্রমিক। তাদের মধ্যে একজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার ভোর রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত চার শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।

নিহত শ্রমিকরা হলেন- চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের আলোদিয়ার বাজার এলাকার শাহজাহান মিয়ার ছেলে মিজানুর রহমান (৪২), ফাহিম (২৫), লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বাংলাবাড়ী এলাকার আব্দুস সোবহানের ছেলে মো. শাকিল (২০) ও কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী এলাকার টিপু শেখের ছেলে আবু সিদ্দিক (৩০)।

এছাড়া দগ্ধ দুই শ্রমিক লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বাংলাবাড়ি এলাকার বাউরা এলাকার সুন্দর আলীর ছেলে রফিক মিয়া (৪৫) এবং রহমতপুর এলাকার রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে মো. রাজু (৪০) রাজধানীর বেসরকারি একটি হাসপাতালে এখনও চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের মধ্যে রাজুর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।