লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটে শুধু ড্রেজিংই হচ্ছে, সুফল নেই

Lakshmipur Launch & Ferry Movement Surfferingh pic 13.11.2020

ডেজিংয়ে অব্যবস্থাপনার কারণে মেঘনা নদী খননের সুফল মিলছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। ডুবোচর খনন না করে নদী ড্রেজিং হিসেবেও দেখানোর অভিযোগ রয়েছে। এতে প্রতি বছর বরাদ্দের টাকা জলে যাচ্ছে। বছরের পর বছর ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করছে লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌ-রুটের লঞ্চ ও ফেরি। ডুবোচরে আটকে যাওয়ার আশঙ্কায় পানি মেপে মেপে চলছে লঞ্চ ও ফেরি।
জানা যায়, ২০০৭ সালের এপ্রিল মাসে তিনটি ফেরি নিয়ে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজুচৌধুরীরহাট লঞ্চঘাটটি চালু করে সরকার। এই রুটে চারটি ফেরির মধ্যে একটি ফেরি বিকল রয়েছে। প্রতিদিন ফেরিপথে তিন-চার ঘণ্টা, মাঝে মাঝে ৭-৮ ঘণ্টাও আটকে থাকতে হয়। জোয়ার এলেই নদীতে কিছুটা পানি বাড়ে। জোয়ারের পানিতে ফেরি চলাচল শুরু হয়।

স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর নদী খননের কাজ হলেও জেলায় বিআইডব্লিউটিএ ও খননকাজ দেখভাল করার জন্য অফিস না থাকায় বরাদ্দের টাকা জলে যায়। তদারকির অভাবে বেশির ভাগ সময় খননকাজ বন্ধ থাকে।

এম ভি উপবন লঞ্চের মাস্টার রিপন হাওলাদার জানান, লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটে ডুবোচরের কারণে নদীতে আটকে থাকতে হয়। কিছু লঞ্চ পানি মেপে চলাচল করছে। ডুবোচর খনন করে প্রতি বছর ড্রেজিং হিসেবে দেখানো হয়। তদারকির অভাবে ড্রেজিং হয় কাগজে-কলমে।

মজুচৌধুরীরহাট ফেরিঘাট এলাকায় দায়িত্বরত বিআইডলিওটিসির পরিদর্শক পিয়ার আহাম্মদ ফরাজি জানান, লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটের লক্ষ্মীপুর থেকে মতিরহাট পর্যন্ত বেশ কিছু ডুবোচর আছে। এগুলো যে হারে খনন দেখানো হচ্ছে তাতে বোঝা যায় তদারকির অভাব রয়েছে। প্রতি বছর এভাবে নদীতে ডুবোচর খনন হওয়ায় একই স্থানে ডুবোচর দেখা দিয়েছে।

এই রুটে ফেরিতে চলাচলকারী ট্রাক ডাইভার হোসাইন আহমদ জানান, যেখানে আগে দুই-আড়াই ঘণ্টায় ফেরি পারাপারে সময় লাগতো। এখন সেখানে ৪-৫ ঘণ্টা লাগে, মাঝে মাঝে ৭ ঘণ্টার মতো লাগে। এতে করে দুই পাশে ট্রাক বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করতে হয়। এতে পরিবহন ব্যয় বাড়ছে। যারা প্রভাব পড়ছে দ্রব্যমূল্যর ওপর।

লক্ষ্মীপুরে দায়িত্বরত বিআইডব্লিউটিসির সহকারী পরিচালক মো. কাউছার জানান, মজুচৌধুরীরহাট ফেরিঘাটের রহমত আলী চ্যানেলে ডুবোচর জেগে ওঠায় স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারছে না ফেরি। জোয়ার-ভাটার দিকে তাকিয়ে ফেরি ও লঞ্চ ছাড়তে হয়। সঠিক সময়ে গন্তবে ফেরি ও লঞ্চ না পৌঁছায় দু-পাড়ে দিনের পর দিন আটকে আছে শত শত পণ্যবাহী ট্রাক। নাব্য সংকট ও ডুবোচরের কারণে ফেরি চলাচলে সমস্যার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএ'র উপপরিচালক একেএম কায়সারুল ইসলাম জানান, যাত্রীসাধারণের ভোগান্তি লাঘব করার লক্ষ্যে ডুবোচর খননকাজ চলমান রয়েছে। তবে যে গতিতে চলছে, তাতে দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে ড্রেজিং কাজ শেষ হবে।