পাবনার সেই সিভিল সার্জনকে গাইবান্ধায় শাস্তিমূলক বদলি!

ডা. মেহেদী ইকবাল

পাবনার আলোচিত সেই সিভিল সার্জন ডা. মেহেদী ইকবালকে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (চলতি দায়িত্বে) পদে বদলি করা হয়েছে। সোমবার বিকেলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা পরিদফতরের উপ-সচিব শারমিন আখতার জাহান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই বদলির আদেশ দেওয়া হয়।

সূত্রের দাবি, সিভিল সার্জন থেকে পদাবনতি ঘটিয়ে গাইবান্ধার সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক করা হয়েছে তাকে। এটা এক ধরনের শাস্তিমূলক বদলি।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, গত ২৯ অক্টোবর স্বাস্থ্য মহাপরিচালক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম পাবনার সিভিল সার্জন অফিস, পাবনা মেডিকেল কলেজ, পাবনা মানসিক হাসপাতাল, পাবনা টিবি ক্লিনিক ও ২৫০ শয্যার পাবনা জেনারেল হাসপাতাল পরিদর্শনে আসেন।

এ উপলক্ষে ঐ দিন সকালে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাসহ সুধীজনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ডিজি। এ সভায় সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। সভা চলাকালে পাবনার সিভিল সার্জন ডিজির উপস্থিতিতে আকস্মিকভাবে সাংবাদিক এবং টিভি ক্যামেরাপারসনদের সভা কক্ষ থেকে বের করে দেন। এ ঘটনায় উপস্থিত সবাই হতভম্ব হয়ে পড়েন।

সভায় উপস্থিত পাবনা প্রেসক্লাব সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান সভায় আমন্ত্রণ জানিয়ে এভাবে বের করে দেওয়ার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বলেন, ১৭ জেলার পুরোনো জেলা পাবনা। সিভিল সার্জনের অযোগ্যতা ও ব্যর্থতায় এই জেলায় এখন পর্যন্ত পিসিআর ল্যাব বা কোভিড টেস্টের কোনও ব্যবস্থা হয়নি। জেলার ৯টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোনও চিকিৎসা নেই। এছাড়া নানা ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতিতে ডুবে আছে জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ। এ কারণেই নিজেদের অনিয়ম দুর্নীতি ঢাকতে সাংবাদিকদের সভা থেকে বের করে দেওয়া হয়। এরই প্রতিবাদে ওইদিন সাংবাদিকরা স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের সকল কর্মসূচি বয়কট করেন এবং পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মেহেদী ইকবালকে প্রত্যাহারের দাবি জানান।

এ ঘটনার পর পাবনা জেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় বক্তারা পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মেহেদী ইকবালকে তিরষ্কার করেন।

পাবনার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. কেএম আবু জাফর সিভিল সার্জনের বদলির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সদ্য বদলিকৃত সিভিল সার্জন মেহেদী ইকবালকে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (চলতি দায়িত্বে) পদে বদলি করা হয়েছে।

পাবনায় কর্মরত একাধিক সিনিয়র সাংবাদিক বলেন, সদ্য বদলিকৃত সিভিল সার্জন মেহেদী ইকবাল একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি। তাকে যেখানেই বদলি করা হোক তার আগে তার চিকিৎসা প্রয়োজন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাবনার সাবেক এক সিভিল সার্জন বলেন, উনার পদাবনতি হয়েছে। সিভিল সার্জন এবং সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) পদের অনেক তফাৎ। তাই এটি এক হিসেবে শাস্তিমূলক বদলি।