কবর থেকে লাশ চুরির চেষ্টার অভিযোগ

গাজীপুরগাজীপুরের কালিয়াকৈরে পুনরায় ময়নাতদন্তের ভয়ে কবর খুড়ে গৃহবধূ জুলেখা আক্তার শিখার (২৫) লাশ চুরির চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। শিখা উপজেলার আশাপুর গ্রামের জসিম উদ্দিনের মেয়ে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ আলামত বিনষ্ট করার জন্যই লাশ চুরির চেষ্টা করা হয়। টের পেয়ে নিহতের পরিবার কবরস্থানে যাওয়ার আগেই দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। তবে সেখানে দুর্বৃত্তরা কোদালসহ কবর খোড়ার সরঞ্জাম রেখে যায়। শুক্রবার (২০ নভেম্বর) রাতে উপজেলার বেনুপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতের বাবা জসিম উদ্দিন জানান, প্রায় ১০ বছর আগে পারিবারিকভাবে শিখার সঙ্গে পাশের ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলার যাদবপুর গ্রামের আতাউর মাস্টারের ছেলে মেহেদী হাসানের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছু দিন পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝগড়া-বিবাদ শুরু হয়। এর জেরে স্ত্রী শিখাকে স্বামী মেহেদী হাসান বিভিন্ন সময় মারধর করতেন। মারধরের এক পর্যায়ে স্বামী মেহেদী ও তার পরিবারের সদস্যরা স্ত্রী শিখাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। পরে গত ৯ সেপ্টেম্বর স্বামী মেহেদী ও শ্বশুর আতাউরসহ তাদের কয়েকজন স্বজন কালিয়াকৈরে এসে বাবার বাড়ি থেকে শিখাকে নিয়ে যায়। এর দুইদিন পর ১১ সেপ্টেম্বর শ্বশুরবাড়ি থেকে শিখার লাশ উদ্ধার করে ধামরাই থানা পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের লাশ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। লাশ উদ্ধারের সময় সুরতহাল প্রতিবেদনে পুলিশ নিহত গৃহবধূর শরীরের বিভিন্ন স্থানে একাধিক আঘাতের চিহ্ন উল্লেখ করে। পরে ময়নাতদন্ত শেষে গৃহবধূর লাশ আশাপুর গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়।

ওইদিন শিখার বাবা জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে স্বামী মেহেদী হাসান, শ্বশুর আতাউরসহ কয়েকজনকে আসামি করে ধামরাই থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

জসিম উদ্দিন আরও জানান, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেয়ে ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে নারাজি দেন। তিনি পুনরায় ময়নাতদন্তের আবেদন করেন। পরে বিজ্ঞ আদালত সন্তুষ্ট হয়ে ৯ নভেম্বর একটি আদেশ দেন। ওই আদেশে গাজীপুরের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে গৃহবধূ শিখার লাশ উত্তোলন করে পুনরায় ময়নাতদন্তে পাঠানোর জন্য মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে নিদের্শ দেওয়া হয়। ওই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার (২২ নভেম্বর) শিখার লাশ উত্তোলন করার কথা রয়েছে। তবে এর আগেই শুক্রবার রাতে কে বা কারা কবর খুড়ে শিখার লাশ উত্তোলনের চেষ্টা করে।

এ বিষয়ে জানতে ধামরাই থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) কামাল হোসেনকে একাধিকবার তার মুঠোফোনে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, কবর খুড়ে লাশ চুরির চেষ্টার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে রবিবার (২২ নভেম্বর) ধামরাই থানা পুলিশ লাশটি উত্তোলন করবে। আমাদের পুলিশ লাশ উত্তোলনের সময় ধামরাই থানা পুলিশকে সহযোগিতা করবে।