খুলনায় এক বছরে শিশুসহ ৩৬ জন এইচআইভি পজিটিভ, মৃত্যু ৭

এইচআইভিএক বছরে খুলনায় ৩৬ জন এইচআইভি পজিটিভ রোগী পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৭ জন পুরুষ ১৫ জন নারী এবং চার জন শিশু রয়েছে। এ সময়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পুরুষ চার জন, নারী ২জন এবং শিশু ১ জন।



খুলনা মেডিক্যাল কলেজ (খুমেক) হাসাপাতালের স্ট্রেংদেনিং অব এইচআইভি সার্ভিসেস প্রকল্পের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোল্যা মো. নুরুল আসলাম এসব তথ্য জানিয়েছেন। 

তিনি বলেন, গত বছর তুলনায় এ বছর এইচআইভি পজিটিভ রোগী কম পাওয়া গেছে। গত সেপ্টেম্বরে এইডস শনাক্তের কিটস ছিল না। করোনার কারণে অনেকেই এইচআইভি টেস্ট করাতেও আসেননি। তবে ইতোমধ্যে যাদের এইডস শনাক্ত হয়েছে তাদের নিয়মিত বিনামূল্য ওষুধ ও সেবা দেওয়া হচ্ছে। খুমেক হাসপাতালের এআরটি সেন্টারে গত এক বছরে (২০১৯ সালের নভেম্বর থেকে ২০২০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত) ৮২০ জনের এইচআইভি পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে পজিটিভ হন ৩১ জন। পাশাপাশি ছয় হাজার ৮৩৭ জন গর্ভবতী মাকে এইচআইভি/এইডস পরীক্ষায় শিশুসহ পাঁচ জন পজিটিভ আসে। বর্তমানে খুলনা বিভাগে ২৮৫ জন এইচআইভি পজিটিভ রোগীকে বিনামূল্যে এআরটি সেবা দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে খুলনায় ৯৯ জন, বাগেরহাটে ১৩ জন, বরগুনা এক জন, চুয়াডাঙ্গায় দুই জন, ফরিদপুরে দুই জন, গোপালগঞ্জে সাত জন, যশোরে ৭৪ জন, ঝিনাইদাহে ৯ জন, মাদারীপুরে এক জন, মাগুরায় পাঁচ জন, নড়াইলে ৩২ জন, পিরোজপুরে তিন জন ও সাতক্ষীরায় ৩৭ জনকে সেবা দেওয়া হচ্ছে।

এমন পরিস্থিতিতে ১ ডিসেম্বর বিশ্ব এইডস দিবস পালিত হচ্ছে। এবারের এ দিবসের প্রতিপাদ্য হলো ‘সারা বিশ্বের ঐক্য, এইডস প্রতিরোধে সবাই নিবো দায়িত্ব’। দিবসটি উপলক্ষে সকাল ১০টায় খুমেক হাসপাতাল চত্বর থেকে একটি র‌্যালি বের হয়। পরে হাসপাতালে কনফারেন্স রুমে এইডস প্রতিরোধ ও সচেতনতামূলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. মুন্সী রেজা সেকেন্দার।

খুমেক হাসপাতালের গাইনি ও প্রসূতি বিভাগের প্রধান ডা. সামছুর নাহার লাকী এক সেমিনারে বলেন, প্রত্যেক গর্ভবতী ও গর্ভোত্তর মাকে এইচআইভি/এইডস পরীক্ষা আওতায় আনা জরুরি হয়ে পড়েছে। তিনি সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এইডস পরীক্ষার ব্যাপকতা বাড়ানোর আহবান জানান।

খুলনার মুক্তি সেবা সংস্থার (কেএমএসএস) মতে, সমুদ্র ও স্থল সীমান্ত অতিক্রম করে দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশকারীদের রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা না করা, নিষিদ্ধ পল্লী ও ভাসমান যৌন কর্মীদের নিয়মিত রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় এবং চালকদের অবাধে নিষিদ্ধ পল্লীতে যাতায়াত, পুরুষ সমকামি (এমএসএম) বৃদ্ধি, কনডম ব্যবহারে অনীহার কারণে এ অঞ্চলে এইডসের ভয়াবহতা বাড়ছে।