বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে জিয়াউর রহমানের ভাষণ, কলেজ অধ্যক্ষকে অব্যাহতি

-

রাজশাহীর তানোর আবদুল করিম সরকার সরকারি কলেজে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের বদলে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাষণ মাইকে বাজানো হয়েছে। এ ঘটনায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল আজিজকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মহাম্মদ শরীফুল হক জানান, এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকালে কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো কমিটির সদস্যদের নিয়ে মিটিং করে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল আজিজকে অব্যাহতি দিয়েছেন। সেই সাথে কলেজের ইংরেজি বিষয়ের প্রভাষক হাবিবুর রহমান সেলিকে নতুন করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়েছেন।

তানোর পৌর যুবলীগের সভাপতি রাজিব সরকার হিরো ও সাধারণ সম্পাদক ওহাব সরদার জানান, জাতির গুরুত্বপূর্ণ এমন দিনে বিভ্রান্তিকর ভাষণ শোনানোর কারণে তানোরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বিজয় দিবসের কর্মসূচিতে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ও কালজয়ী ভাষণ আজও দেশপ্রেমিকদের অনুপ্রাণিত করে। কিন্তু তানোরে কলেজে এরকম ঘটনা আসলে দুঃখজনক। তবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল আজিজকে অব্যাহতি দিয়ে নতুন করে হাবিবুর রহমান সেলিকে দায়িত্ব দেওয়ায় আমরা আনন্দিত।

জানা গেছে, বিজয় দিবসে কলেজ চত্বরে শহীদ মিনারে সকালে কলেজের শিক্ষক কর্মচারীরা কলেজ শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় কলেজের নিজস্ব সাউন্ড সিস্টেমে বাজতে শুরু করে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাষণ। ঘটনা টের পেয়ে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা ছুটে গিয়ে জিয়াউর রহমানের ভাষণ বাজানো বন্ধ করেন। পরে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ সংগ্রহ করে সেটি বাজানো শুরু হয়। কলেজ অধ্যক্ষের এমন দায়িত্ব অবহেলায় চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয়দের মাঝে।

তানোর আবদুল করিম সরকার সরকারি কলেজে (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষ আব্দুল আজিজ  আত্মপক্ষ সমর্থনে বলেন, মঙ্গলবার কলেজের পিয়ন আরিফ ও ফুলকুমারকে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ একটি মেমোরি কার্ডে তুলে আনতে স্থানীয় একটি মাইক সার্ভিসে পাঠানো হয়। সেখান থেকে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের বদলে জিয়াউর রহমানের ভাষণ দেওয়া হয়। এ সময় মেমোরি কার্ডে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ তোলা হয়েছে কিনা সেটা পরীক্ষা করে দেখা হয়নি। বিজয় দিবসের কর্মসূচির শুরুতে ভাষণ বাজাতে গিয়ে এই বিভ্রাট ঘটে গেছে। এটি ইচ্ছাকৃত নয় ভুলক্রমে ঘটেছে। আমি কোনও দোষ করিনি। অন্যের ভুলের জন্য আমাকে শাস্তি পেতে হলো।

তানোর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, বিষয়টি আমি জানার পর তদন্ত শুরু করে সত্যতা পেয়েছি। আব্দুল আজিজকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।