আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ গৃহবধূর মৃত্যু

রংপুররংপুর অঞ্চলে হাড় কাঁপানো শৈত্যপ্রবাহে জনজীবন অচল হয়ে পড়ছে। প্রচণ্ড শীতে আগুন পোহাতে গিয়ে লিমা নামে এক নারী দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন। বার্ন ইউনিটের প্রধান সহকারী অধ্যাপক ডা. এম এ হামিদ পলাশ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

লিমা রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার সেতুলপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনে স্ত্রী। সহায়-সম্বলহীন হতদরিদ্র পরিবার অর্থের অভাবে নিহত লিমার লাশ নিয়ে যেতে পারছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

হাসপাতালের বার্ন ইউনিট ও স্বজনরা জানিয়েছেন, রবিবার সকালে শৈত্য প্রবাহ থেকে রক্ষা পেতে আগুন পোহাতে গিয়ে লিমার পরনের কাপড়ে আগুন লাগে। মুহূর্তের মধ্যে তা সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। মারাত্মক দগ্ধ অবস্থায় তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে দুদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায়  মারা যান তিনি।

সরেজমিন বার্ন ইউনিটে দেখা গেছে, গৃহবধূ লিমার মরদেহটি ওয়ার্ডের মধ্যে পড়ে আছে। তার মা গোলাপি বেগম জানান, মাত্র ১৫ দিন আগে তার মেয়ে একটি সন্তান প্রসব করেছেন। প্রচণ্ড শীতের কারণে কাহিল হয়ে পড়ায় শীত নিবারণের জন্য খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে গিয়ে তার মেয়ে মারা যান। তার জামাই লাশ বাড়িতে নেওয়ার জন্য টাকা সংগ্রহ করতে বাড়িতে গেছে, আসলেই লাশ নিয়ে যাওয়া হবে।

বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা. এম এ পলাশ জানান, তার শরীরের শ্বাসনালিসহ ৬০ ভাগ পুড়ে গিয়েছিল। বর্তমানে হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ আরও ১৫ জন রোগী চিকিৎসাধীন আছে।

এদিকে, বাসায় নিয়ে যাওয়ার মতো প্রয়োজনীয় অর্থ না থাকায় সহায় সম্বলহীন লিমার মরদেহ নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। জেলা প্রশাসন থেকে মরদেহ নিয়ে যাওয়া ও দাফন করার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ থাকলেও এক্ষেত্রে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক আসিব আহসানের সঙ্গে বেশ কয়েকবার অফিসিয়াল মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।