তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের পুনর্বাসন প্রকল্পের স্থান পরিবর্তনের দাবিতে বিক্ষোভ

জামালপুর সদরে সরকারি খাস জমিতে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের পুনর্বাসন প্রকল্প ‘স্বপ্ন শতনীড়’-এর স্থান পরিবর্তনের দাবিতে মানববন্ধন, সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করেছেন এলাকাবাসী। শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৪টার দিকে জামালপুর-ঢাকা মহাসড়কের বিনন্দেরপাড়া মোড়ে কেন্দুয়া ইউনিয়নবাসীর ব্যানারে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন– দাবি আদায় কমিটির আহ্বায়ক আলাল উদ্দিন মণ্ডল, উপদেষ্টা ও কেন্দুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জালাল উদ্দিন মণ্ডল, ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলাম স্বপন, বিনন্দেরপাড়া মোড় ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সোজায়েত আলী সোজা, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজাম্মেল হক তোতা, ১নং কেন্দুয়া ইউপির সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউল হক, এলাকাবাসীদের মধ্যে হাবিবুল্লাহ, সুজন, জাহিদ হাসান, মোবারক, সিফাত, হৃদয় ও আরও অনেকে।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘বিনন্দেরপাড়ায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কোজগড় ও বিনন্দেরপাড়া ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন এলাকায় তৃতীয় লিঙ্গের সম্প্রদায়ের পুনর্বাসন প্রকল্পের স্থান হতে পারে না। জায়গাটি জামালপুর-ঢাকা মহাসড়কের পাশে একটি বাণিজ্যিক এলাকায় পড়েছে।’ বক্তারা প্রস্তাবিত এই প্রকল্পটি অন্য কোথাও সুবিধাজনক স্থানে সরিয়ে নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান।

কেন্দুয়া ইউনিয়নের সহস্রাধিক বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষসহ বিনন্দেরপাড়া মোড়ের পাঁচ শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে ব্যবসায়ী ও দোকান কর্মচারীরা এই মানববন্ধনে অংশ নেন। মানববন্ধন শেষে তারা জামালপুর-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে এবং বিনন্দের পাড় থেকে কুজগড় পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করে প্রস্তাবিত প্রকল্পটি অন্য স্থানে সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানান। এ সময় দুই দিকে বিপুল সংখ্যক যানবাহন আটকা পড়ে।

এদিকে জামালপুর সদরের এসি-ল্যান্ড মাহমুদা বেগম বলেন, ‘মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সারাদেশের গৃহহীন ও ভূমিহীন তৃতীয় লিঙ্গ সম্প্রদায়ের মানুষদের পুনর্বাসনের বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন। এরই অংশ হিসেবে জেলা প্রশাসন জামালপুর সদরের বিনন্দেরপাড়া এলাকায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পাশেই জামালপুর সদর উপজেলার তৃতীয় লিঙ্গের ১০০ জন সদস্যকে পুনর্বাসনের জন্য প্রাথমিকভাবে দুই একর সরকারি খাস জমিতে ‘স্বপ্ন শতনীড়’ নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। তাদের প্রত্যেককে একটি করে আধাপাকা ঘর দেওয়া হবে। পরে এই প্রকল্পের সঙ্গেই আরও দুই একর সরকারি খাস জমিতে তাদের জন্য আয়বর্ধনমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের প্রত্যেককে জীবিকার পথ করে দেওয়া হবে। এতে করে তারা সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসে সমাজের আর বোঝা হয়ে থাকবেন না।

সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় ও নির্দেশনায় হতে যাওয়া এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে এলাকাবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।