উৎসবের আমেজ নেই সরস্বতী প্রতিমার হাটে

গোপালগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে বসেছে বিদ্যার দেবী সরস্বতীর প্রতিমার হাট। সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা এসব হাট থেকে সরস্বতীর প্রতিমা কিনছেন। জেলার হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে ও বিভিন্ন মন্দিরে পূজার আয়োজন করা হচ্ছে। কিন্তু করোনার কারণে এবছর স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সেগুলোতে পূজার আয়োজন হচ্ছে না। ফলে জেলার বিভিন্ন প্রতিমা হাটে বিকিকিনিও হচ্ছে কম। এতে লোকসানের মুখে পড়েছেন প্রতিমার কারিগররা।সরস্বতী প্রতিমার হাট

মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত হবে সরস্বতী পূজা। প্রতি বছরের মতো এবছরও শুক্লাপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে ও বিভিন্ন মন্দিরে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে এই পূজা অনুষ্ঠিত হবে বিদ্যার দেবীর আরাধনা। এ পূজার প্রধান অনুসঙ্গ হল প্রতিমা। জেলা শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীসহ জেলার অর্ধশতাধিক স্থানে সরস্বতী প্রতিমার হাট বসেছে। আর বিক্রির জন্য এসব হাটে প্রতিমা নিয়ে এসেছেন কারিগররা। এসব প্রতিমা বিকিকিনি চলবে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত।সরস্বতী প্রতিমার হাট

যে যার পছন্দ আর সাধ্য মতো কিনছেন প্রতিমা। তবে এ বছর প্রতিমার দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় একটু বেশি বলে দাবি করেন ক্রেতারা। হাটে আনা এক-একটি প্রতিমা বিক্রি হচ্ছে আড়াই’শ থেকে পাঁচ হাজার টাকায়। শুধু প্রতিমাই নয়, এ হাটে বিক্রি হচ্ছে পূজার অন্যান্য উপকরণও। তবে করোনার কারণে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় হাটে আনা এসব প্রতিমার অধিকাংশই থেকে যাচ্ছে অবিক্রিত। এতে লোকসানের মুখে পড়েছেন কারিগরেরা।সরস্বতী প্রতিমার হাট

শহরের বটতলা এলাকার গৃহবধু পপি বালা বলেন, আমার মেয়ে প্রাইমারি স্কুলে লেখাপড়া করে। তাই বাড়িতে বিদ্যার দেবী সরস্বতি পূজা আয়োজন করা হয়েছে। মায়ের আশির্বাদ পেলে মেয়ে লেখাপড়ায় ভালো করবে এ বিশ্বাসে বাড়িতে সরস্বতী পূজার আয়োজন করি। 

প্রতিমা কিনতে আসা উত্তম সাহা, প্রত্যাশা মন্ডল, বাদল সাহা, বিষ্ণু সাহা, অসিম রায়, সমীর আইচ বলেন, প্রতি বছরের মতো এ বছর বাড়িতে সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হবে। সেজন্য গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীতে সরস্বতী প্রতিমা কিনতে এসেছি। এখানে প্রতিটি প্রতিমা ২৫০ টাকা থেকে ছয় হাজার  টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হচ্ছে। গত বছরের তুলানায় এ বছর দাম তুলনামূলক বেশি। দেখে শুনে সাধ্যমতো কেনার চেষ্টা করছি।সরস্বতী প্রতিমার হাট

গোপালগঞ্জ শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীর হাটে প্রতিমা বিক্রি করতে আসা স্বপন পাল, তপন পাল, দিপক পাল, তুষার পাল বলেন, করোনার কারণে এবার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। তাই সেখানে পূজাও হবে না। এ কারণে প্রতিমা বেচাকেনা কম হচ্ছে। আমরা সারা বছর এই পূজা উপলক্ষে প্রতিমা তৈরি করি। এখন যদি তৈরি প্রতিমাগুলো বিক্রি করতে না পারি তাহলে আমাদের লোকসানের মুখে পড়তে হবে। এমনিতেই করোনার কারণে আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা নাজুক। একইসঙ্গে প্রতিমা তৈরির কাজে ব্যবহৃত মাটি, ছোন, রংসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের দাম প্রতিবছরই বেড়েই চলছে। এতে প্রতিমার দাম কিছুটা বাড়লেও ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে।

গোপালগঞ্জ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ডা. অসিত কুমার মল্লিক জানান, যে সব মন্দিরের সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হবে সে সব মন্দিরের স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য বলা হয়েছে। এসব দেখাশোনার জন্য আমাদের একটি টিম গঠন করা হয়েছে যারা মন্দিরগুলো পরিদর্শন করবে।