করোনা চিকিৎসায় অবশেষে পাবনায় চালু হচ্ছে আইসিইউ

করোনা রোগীর চিকিৎসায় আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চার শয্যার নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) ইউনিটের কার্যক্ষম শুরু হবে। এ তথ্য জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য ও পাবনা সদর আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স। মঙ্গলবার দুপুরে জেনারেল হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবার চিত্র পরিদর্শন শেষে হাসপাতালের পরিচালক, চিকিৎসক ও কর্মচারীদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান।

এ সময় পাবনা মেডিক্যাল কলেজে আরটিপিসিআর ল্যাব স্থাপন এবং জেনারেল হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থার কাজ দ্রুত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনাও দেন তিনি।

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ডা. আইয়ুব হোসেন বলেন, ‘করোনা চিকিৎসায় সারাদেশে বড় হাসপাতালগুলোতে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। পাবনা হাসপাতালেও সে কাজ চলমান। মাঝখানে কাজের কিছুটা ধীরগতি থাকলেও সম্প্রতি কাজ দ্রুত এগোচ্ছে। আশা করছি, আগামী একমাসের মধ্যেই এই ইউনিট চালু করা সম্ভব হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘করোনা রোগী বৃদ্ধি পাওয়ায় জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে কোভিড ইউনিট পুনরায় চালু করা হয়েছে। লোকবল সংকট ও কিছু কারিগরি সীমাবদ্ধতায় হাসপাতালে চার শয্যার আইসিইউ চালু করা সম্ভব হয়নি। সংসদ সদস্য মহোদয়ের সঙ্গে বৈঠকে আমরা আপৎকালীন কিছু সমাধান বের করেছি। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই চার শয্যার আইসিইউ চালুর সর্বোচ্চ চেষ্টা করা করা হবে।’

এদিকে, বৈঠক শেষে পাবনা মেডিক্যাল কলেজের চলমান আরটিপিসিআর ল্যাব নির্মাণকাজের অগ্রগতির বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দ্রুত কাজ শেষ করতে গণপূর্ত বিভাগকে তাগাদা দেন গোলাম ফারুক প্রিন্স। এ সময় গণপূর্ত বিভাগ পাবনার নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল আজিম জানান, পিসিআর ল্যাবের অবকাঠামো নির্মাণের প্রায় ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ শেষ করে আগামী একমাসের মধ্যে স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

বৈঠক শেষে গোলাম ফারুক প্রিন্স বলেন, ‘স্বাস্থ্য বিভাগের লোকবল সংকট ও কিছু জটিলতায় বার বার পিসিআর ল্যাব স্থাপনের কাজ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। আমি ঢাকায় স্বাস্থ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছি। তারা অবকাঠামো নির্মাণ শেষ হলেই কারিগরি বিষয়ে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তারা আন্তরিক হলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে ল্যাব স্থাপন সম্ভব হবে।’

হাসপাতালের আইসিইউ চালুর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রশিক্ষিত চিকিৎসক ও নার্স সংকট আইসিইউ চালুর ক্ষেত্রে বড় বাধা। সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা চালু না হলেও বিকল্প পদ্ধতিতে অক্সিজেন সরবরাহের মাধ্যমে এ ইউনিট চালুর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সীমিত লোকবলের মধ্যেই প্রশিক্ষণ দিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে চার শয্যার আইসিইউ চালু করবেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ ব্যপারে তাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে।’

প্রসঙ্গত, সারাদেশে ২৫০টি পিসিআর ল্যাবে করোনা পরীক্ষা চালু থাকলেও পাবনায় এখনও পিসিআর ল্যাবের কার্যক্রম শুরু হয়নি। লোকবল ও কারিগরি সংকটে উদ্বোধনের প্রায় পাঁচ বছরেও চালু হয়নি জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিট। করোনা আক্রান্ত গুরুতর রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকায় তাদের ঢাকা কিংবা রাজশাহীতে যেতে হয়।