অবশেষে জীবিতের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলেন সহিদা

বাংলা ট্রিবিউনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর অবশেষে জীবিতের তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে সহিদা বেগমের (৮৪)। ১৪ মাস আগে তাকে নির্বাচন কমিশনের তালিকায় মৃত দেখানো হয়েছিল। এ নিয়ে গত ১৬ এপ্রিল বাংলা ট্রিবিউনে সংবাদ প্রকাশিত হয়। জানা গেছে, এক যুগ আগে মারা যাওয়া স্বামীর অবসর ভাতায় সংসার চলছিল সহিদা বেগমের। কিন্তু তাকে মৃত দেখানোয় গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে (১৪ মাস) স্বামীর অবসরভাতা উত্তোলন করতে পারছেন না তিনি। পাচ্ছেন না নাগরিক অন্যান্য সুবিধাও।

সহিদা বেগম দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার আব্দুলপুর ইউনিয়নের নান্দেড়াই গ্রামের  মৃত ফজির উদ্দিন ইসাহাকের স্ত্রী।

জানা যায়, সহিদা বেগমের স্বামী ফজির উদ্দিন ইসাহাক ভূমি অফিসের চতুর্থ শ্রেণির অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী। তার মৃত্যুর পর অবসরভাতার টাকা দিয়ে সহিদা একমাত্র ছেলেকে নিয়ে কোনও রকমে সংসার চালাতেন। আগে তিনি পাস বইয়ের মাধ্যমে টাকা তুলতেন। গত বছরে পাস বইয়ের স্থলে ব্যাংকে গিয়ে টাকা উত্তোলনের নিয়ম শুরু হয়। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ব্যাংকে গিয়ে টাকা গ্রহণের সময় সহিদা বেগমকে জানানো হয় যে, তিনি টাকা পাবেন না। কারণ নির্বাচন কমিশন থেকে তাকে মৃত দেখাচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের এমন গাফিলাতির কারণে গত ১৪ মাস ধরে তিনি কোনও টাকা তুলতে পারেননি। এরই মধ্যে তিনি বেশ কয়েকবার নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে গেছেন। নাম সংশোধনের জন্য আবেদনপত্র, চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্র, ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি, পাস বই, ব্যাংকের চেক বইসহ যাবতীয় কাগজপত্রাদি নির্বাচন কার্যালয়ে জমা দিয়েছেন। এরপরও সংশোধিত হয়নি নাম। মৃত থেকে জীবিত হতে পারেননি সহিদা বেগম।

সহিদা বেগম ১৪ মাস ধরে জীবিত হওয়ার চেষ্টায় ঘুরছেন প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে। এমন সংবাদ গত ১৮ এপ্রিল প্রকাশিত হয়। এরপরই টনক নড়ে নির্বাচন কমিশনের। অবশেষে তাকে ভোটার আইডি কার্ডে জীবিত হিসেবে অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে চিরিরবন্দর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল মালেক বলেন, ‘সহিদা বেগমের বিষয়টি ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় একটি ভুলের কারণে হয়েছে। আমরা তার নাম পুনরায় জীবিত ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে একটি সার্টিফিকেট প্রদান করেছি।’

১৪ মাস পর জীবিত ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় সংবাদমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সহিদা বেগম। তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকরা আমাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করার কারণেই আমি জীবিত হতে পেরেছি, এজন্য তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। নির্বাচন কমিশন আমাকে একটি সার্টিফিকেট দিয়েছে এবং সেই সার্টিফিকেট দিয়ে আমি টাকা উত্তোলন করেছি।’

আরও খবর: ‘মৃত নারী’ ঘুরছেন জীবিত হওয়ার আশায়!