গৃহহীনদের ঘর নির্মাণ কাজে বাধা, ৩ জনের কারাদণ্ড

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় মুজিববর্ষে হতদরিদ্র, ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে গৃহায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গৃহনির্মাণ কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় তিন জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তিন মাস করে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। বুধবার (২৬ মে) দুপুরে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মহিউদ্দিন এ দণ্ড দেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলো– উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের দীঘিরপাড় গ্রামের মৃত তোয়াজ উল্লাহর ছেলে আহমদ আবুল কালাম (৪৪), আলেক মিয়া (৫৫) ও তার ছেলে সাজন আহমদ (২৫)।

জানা যায়, উপজেলায় প্রথম পর্যায়ের ১১০টির মধ্যে অধিকাংশ ঘরের কাজ প্রায় শেষ। এর মধ্যে ইনাতগঞ্জ বাজার সংলগ্ন দীঘিরপাড় এলাকায় সরকারের খাস খতিয়ানের ২২.৭১ শতক ভূমির মধ্যে আট জন ভূমিহীন ও গৃহহীনের মাঝে ১৬ শতক ভূমি বন্দোবস্ত দিয়ে আটটি গৃহ নির্মাণ কার্যক্রম শুরু করে উপজেলা প্রশাসন। নির্মাণকাজ চলাকালে আহমদ আবুল কালাম আজাদ নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি ভূমি তার নামে বন্দোবস্ত দাবি করে নির্মাণ কাজে বাধা দেয়। এরপর সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমাইয়া মুমিন তাকে একাধিকবার নোটিশ করলে সে উপযুক্ত কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হয়।

চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সহকারী জজ আদালতে আহমদ আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে আদালত নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিলে ইনাগঞ্জের আটটি ঘরের শেষ পর্যায়ের কাজ আটকা পড়ে। আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ ব্যাপারে আদালতে তার জবাব প্রদান করেন। গত মঙ্গলবার (২৫ মে) হবিগঞ্জ সহকারী জজ আদালতের বিচারক অভিজিৎ চৌধুরী আবুল কালামের মামলা খারিজ করে দেন। বুধবার সকালে বন্ধ থাকা নির্মাণকাজ পুনরায় শুরু করতে সেখানে যান শ্রমিকরা। তখন আহমদ আবুল কালাম আজাদ লোকজন নিয়ে শ্রমিকদের নির্মাণসামগ্রী নামাতে বাধা দেয় ও মারমুখী আচরণ করে। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মহিউদ্দিন নবীগঞ্জ থানার একদল পুলিশ সহকারে ঘটনাস্থলে পৌঁছেন। পরে সরকারি কাজে বাধা ও শ্রমিকদের আক্রমণের ঘটনায় দখলদার আহমদ আবুল কালামসহ তিন জনকে আটক করেন। পরে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ১৮৬ ধারায় সরকারি কাজে বাধা প্রদান ও আক্রমণের দায়ে প্রত্যেককে তিন মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।

এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মহি উদ্দিন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর প্রকল্পের নির্মিত ঘরের মালামাল চুরি করে আবুল কালাম আজাদ। তার ব্যক্তিগত ঘরের কাজে সরকারি মালামাল ব্যবহার করার বিষয়ে নিয়মিত মামলা করার প্রস্তুতি চলছে। বর্তমানে প্রকল্পের ঘর নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মাঝে ভূমিহীনদের মাঝে ঘর বুঝিয়ে দিতে পারবো।’