পরিচয় মিলেছে অজ্ঞাত লাশের, কথিত প্রেমিকসহ গ্রেফতার ২

লালমনিরহাটে পাটক্ষেত থেকে উদ্ধার হওয়া সেই অজ্ঞাত নারীর লাশের পরিচয় মিলেছে। তার নাম জেলেখা জেলের (২৪)। তিনি সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের রতিপুর এলাকার মৃত দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে। তাকে হত্যার অভিযোগে দুই জনকে গ্রেফতার করেছে সদর থানা পুলিশ। সোমবার (২৮ জুন) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

গ্রেফতার আসামিরা হলো– গোকুন্ডা ইউনিয়নের তিস্তা পাঙ্গাটারী এলাকার দীনেশ চন্দ্র বর্মণের ছেলে বিধান চন্দ্র বর্মণ (২৬) এবং তার সহযোগী একই এলাকার সুদর্শন বর্মণের ছেলে সুকুমার চন্দ্র বর্মণ ওরফে হরতাল (২১)।

সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন– অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) মারুফা জামাল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(হেড কোয়ার্টার) আতিকুল ইসলাম ও সদর থানার ওসি শাহ আলম।

মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) বিকালে গোকুন্ডা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের রতিপুর বসুনীয়া পাড়ার জনৈক মমিনুল ইসলামের পাটক্ষেত হতে অজ্ঞাত পরিচয় নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত শেষে ময়নাতদন্ত করা হয়। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ওই নারীর প্রেমিক বিধান চন্দ্র বর্মণকে গ্রেফতারের পর তার দেওয়া তথ্যমতে সহযোগী সুকুমার চন্দ্র বর্মণকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম বলেন, ‘দিনবন্ধু নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে বিধান জেলেখার মোবাইল নম্বর পায়। এক পর্যায়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ১৮ জুন স্ত্রীকে শ্বশুরবাড়িতে রেখে ২১ জুন রাতে জেলেখাকে বাড়িতে ডেকে এনে রাত কাটিয়ে ভোরে পাঠিয়ে দেয় তাকে। পরদিন রাতেও ডেকে এনে একসঙ্গে রাত কাটায়। কিন্তু জেলেখার দাবি ছিল, ভোরে তাকে বিয়ে করে ঢাকায় গিয়ে সংসার করতে হবে। সে অনুযায়ী ভোরে বিধানকে ঘুম থেকে তুলে বিয়ের চাপ দিলে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে জেলেখা চিৎকার করে লোকজন জড়ো করার হুমকি দেয়। উত্তেজিত হয়ে বিধান কাঠ দিয়ে মাথায় মারলে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে সে। এরপর দা দিয়ে কুপিয়ে গলা চেপে হত্যা করে লাশ খাটের নিচে লুকিয়ে রাখে। ওইদিন দিবাগত রাতেই (২৩ জুন) বিধান ও তার বন্ধু সুকুমারসহ লাশ পাশের পাটক্ষেতে রেখে যায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিধান আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে নিজের দোষ স্বীকার করেছে।’

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (এসআই) মিজানুর রহমান বলেন, ‘অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফা জামাল ও ওসি শাহা আলম স্যারের সার্বিক দিকনির্দেশনায় ক্লুলেস মামলাটির ক্লু উদ্ধার এবং আসামি গ্রেফতার করেছি। শিগগিরই এ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।’