নীলফামারীতে তিস্তা তীরের ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি

নীলফামারীর তিস্তার তীরবর্তী এলাকায় বন্যা অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) বেলা ৩টায় ও সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার দুই সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পাউবোর গেজ পাঠক মো. নুরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গত পাঁচ দিন ধরে তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় জেলার ডিমলার পূর্বছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী ও গয়াবাড়ি ইউনিয়নের এই নদীবেষ্টিত প্রায় ১৫টি গ্রামের ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছে।

উপজেলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ময়নুল হক বলেন, ‘গত পাঁচ দিন ধরে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে ওঠা-নামা করছে। এতে ইউনিয়নের পাগলীরবাজার ও টাপুরচর গ্রামের ৬০০ পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে না পারায় খাদ্য সংকটে ভুগছে ওই পরিবারগুলো।’

একই উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আমিনুর রহমান বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের ছাতুনামা, কেল্লাবাড়ি, ভেন্ডাবাড়ি গ্রামের একাধিক বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে।’

পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন, ‘সোমবার বিকাল থেকে মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত নদীর পানি এক জায়গায় রয়েছে। এতে করে ইউনিয়নের ঝাড়সিংহেরশ্বর ও পূর্বছাতনাই গ্রামের প্রায় ৬০০ পরিবারে বাড়িতে পানি উঠেছে। একদিকে করোনা অন্যদিকে তিস্তার বন্যা মানুষকে বিপাকে ফেলেছে।  স্বাভাবিক চলাফেরা এবং কাজ করতে না পারায় খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে এসব পরিবারের মাঝে।’

সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সকাল ৬টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার চার সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এরপর সকাল ৯টায় কিছুটা কমে বেলা ১২টা পর্যন্ত বিপৎসীমা বরাবর প্রবাহিত হয়। বেলা ৩টায় ফের বিপৎসীমা অতিক্রম করে দুই সেন্টিমিটার ওপরে ওঠে। ওই পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার।

গত ১৩ আগস্ট ওই পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে। সেদিন সকাল ৬টায় বিপৎসীমার ১৫ স্টেণ্টিমটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসফাউদদৌলা বলেন, ‘উজানের পাহাড়ি ঢলে ও অনরবত বৃষ্টির কারণে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ৩টায় ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার দুই সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। পানি সামাল দিতে ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইচগেট খুলে রাখা হয়েছে।’