রাঙামাটিতে প্রথমদিনে পর্যটকের উপস্থিতি কম

প্রায় সাড়ে চার মাস পর পর্যটন স্পট খুলে দেওয়ার পর প্রথম দিন রাঙামাটিতে পর্যটকের উপস্থিতি ছিল কম। রাঙামাটি শহরের পর্যটন করপোরেশনের ঝুলন্ত সেতু, পুলিশের পলওয়েল পার্কসহ বিভিন্ন স্পটে দেখা মেলেনি প্রত্যাশিত পর্যটকদের। তবে ধীরে ধীরে পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে বলে প্রত্যাশা করছেন ব্যবসায়ীরা। তারা জানান, করোনাকালে সাড়ে চার মাস পর্যটন বন্ধ থাকায় রাঙামাটিতে ৩০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।

দেশে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির পর গত ১ এপ্রিল দেশের সব পর্যটন স্পট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। এর পাশাপাশি হোটেল-মোটেলও বন্ধ করে দেওয়া হয়। হোটেল-মোটেল ও পর্যটনস্পটগুলো বন্ধ থাকায় সংকটে পড়ে এই খাতের ব্যবসায়ীরা। এরপর গত ১১ আগস্ট থেকে সরকার লকডাউন তুলে দেয়। ১৯ আগস্ট থেকে সব ধরনের পর্যটনস্পটে ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞাও প্রত্যাহার করা হয়।

Rangamati Parzatan Pic (1)নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রথম দিনে রাঙামাটি শহরের বিভিন্ন স্পটগুলো ঘুরে তেমন একটা পর্যটক পাওয়া যায়নি। অল্প কিছু পর্যটক এদিন ভ্রমণে আসেন। অনেকেই মোটরসাইকেল নিয়ে জেলার বাইরে থেকে ঘুরতে এসেছেন। আবার কেউ কেউ বন্ধুদের নিয়ে ঘুরছেন। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানায় উদাসীনতা লক্ষ করা গেছে।

কিশোরগঞ্জ থেকে স্ত্রীসহ ঘুরতে আসা আবুল হাসান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ঘরবন্দি থাকার পর প্রকৃতির কাছে আসতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। আর দীর্ঘ বন্ধে প্রকৃতিও নতুনভাবে সেজে উঠেছে। সব মিলে অসাধারণ পরিবেশ।’

Rangamati Parzatan Pic (7)ঢাকা থেকে আসা মো. মোক্তার হোসেন জানান, কাপ্তাই লেকের বিশাল জলরাশি মুগ্ধ করেছে। লোকজন কম, এজন্য করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিও কিছুটা কম। তাই ঘুরে বেড়াতে ভালো লাগছে।’

তবে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে মাস্ক ছাড়া কেন ঘুরছেন? এমন প্রশ্নে পর্যটক মো. ইমরান, হাসান ও এমদাদ বলেন, ‘ছবি তোলার জন্য মাস্ক খুলেছি। বিনোদন কেন্দ্র ও পর্যটন এলাকাগুলোতে লোকজন কম, তাই ঝুঁকিও কম। লোকজন যখন বেশি হচ্ছে তখন মাস্ক পরছি।’

এদিকে, এখনও এখানকার হোটেলগুলোতে বুকিং কম। হোটেল মালিক মো. নেছার উদ্দিন বলেন, ‘প্রথম দিন অনুযায়ী প্রত্যাশিত পর্যটক আসেননি রাঙামাটিতে। দিন যত যাবে পর্যটকের সংখ্যাও বাড়বে আশা করি। আমরাও তাদের বরণ করে নিতে সব প্রস্তুতি শেষ করেছি। পর্যটক আসলে দীর্ঘদিন বন্ধের যে ক্ষতি হয়েছে তা কিছুটি পুষিয়ে নিতে পারবো।’

Rangamati Parzatan Pic (5)দীর্ঘদিন পর পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেওয়ায় খুশি টেক্সটাইল ব্যবসায়ীরাও। তাদের প্রত্যাশা, সামনের দিনগুলোতে পর্যটক বাড়তে শুরু করবে। টেক্সটাইল মার্কেটের ব্যবসায়ী মো. হারুন মিয়া বলেন, ‘আমরা অধীর আগ্রহ নিয়ে বসে আছি। রাঙামাটির প্রকৃতি ও আমরা পর্যটকদের জন্য অপেক্ষায় আছি।’

পর্যটন বোটঘাটের ইজারাদার, রমজান আলী বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রথম দিনে পর্যটক কম হলেও ধীরে ধীরে পর্যটক আসতে শুরু করেছে। আমাদের বোটগুলো সংস্কার করে প্রস্তুত রেখেছি এবং চালকরাও প্রস্তুত।’

রাঙামাটি ট্যুরিস্ট পুলিশ উপ-পরিদর্শক মিজানুর রহমান বলেন, ‘পর্যটকদের নিরাপত্তার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণে ট্যুরিস্ট পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।’