পুলিশি হয়রানি-চাঁদাবাজির অভিযোগে ট্রাক-কাভার্ডভ্যান শ্রমিকদের বিক্ষোভ

সড়কে কাগজপত্র পরীক্ষার নামে পুলিশি হয়রানি, চাঁদাবাজি, মাসোহারা আদায়ের অভিযোগ করেছেন ট্রাক কাভার্ডভ্যান, ট্যাংক লরি প্রাইম মুভার মালিক-শ্রমিক সমন্বয় কমিটি রংপুর জেলার শ্রমিকরা। তারা এসব বন্ধ করাসহ দশ দফা দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রংপুর নগরীতে প্রেস ক্লাবের সামনে তারা এ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন। পরে দশ দফা দাবি সংবলিত স্মারকলিপি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী বরাবর প্রদান করা হয়।

এর আগে ট্রাক কাভার্ডভ্যান ট্যাংক লরি শ্রমিকরা নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে রংপুর প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ করে। সমাবেশে বক্তব্য দেন– সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খতিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মানিকসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

এ সময় বক্তারা অভিযোগ করেন, ‘বিগত চার বছর ধরে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ ড্রাইভারদের লাইসেন্স দেওয়া বন্ধ রেখেছে। ফলে প্রায় ১২ থেকে ১৩ লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স পড়ে আছে। লাইসেন্স প্রদান বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা প্রতিনিয়ত পুলিশি হয়রানি ও মামলার শিকার হচ্ছেন। পুলিশ ঠুনকো অজুহাতে সড়কে-মহাসড়কে গাড়ি আটকে লাইসেন্স আর কাগজ পরীক্ষার নামে হয়রানি এবং মাসিক ভিত্তিতে মাসোহারা আদায় করছে। পুলিশের চাঁদাবাজি ও ঘুষ বাণিজ্য বন্ধ করা না হলে তাদের পক্ষে গাড়ি চালানো সম্ভব হবে না।

সে কারণে দশ দফা দাবিতে তারা আন্দোলন শুরু করেছেন। তাদের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য সেতুমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন শ্রমিকরা।

শ্রমিকদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে– ট্রাকচালক লিটন হত্যার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান; ড্রাইভিং লাইসেন্সের জটিলতা দ্রুত নিরসন; পণ্য পরিবহনের সময় মালামাল চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই রোধে জরুরি কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ; এর সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা; বর্ধিত আয়কর প্রত্যাহার করে করোনা কালে আগের মতো জরিমানা ব্যতিত গাড়ির কাগজপত্র হালনাগাদ করার সুযোগ প্রদান; সড়ক মহাসড়কে কাগজপত্র চেকিংয়ের নামে পুলিশি হয়রানি, চাঁদাবাজি ও মাসিক মাসোহারা বন্ধ; সড়ক মহাসড়কের পাশে প্রত্যেক জেলায় আধুনিক সুযোগ সম্বলিত ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ; টার্মিনাল ছাড়া ঢাকা সিটি করপোরেশনসহ সারা দেশের সিটি করপোরেশনের ও পৌরসভায় সড়ক মহাসড়কে চাঁদা আদায় বন্ধ করা।

সমাবেশে শেষে নেতৃবৃন্দ জেলা প্রশাসক আসিব আহসানের কার্যালয়ে গিয়ে তাদের দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি সড়ক মন্ত্রী বরাবর প্রদান করে।