একটি সেতুর দাবিতে কেটে গেছে ৪৯ বছর

দেশ স্বাধীনের পর থেকেই একটি সেতুর অপেক্ষায় রয়েছেন সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার দশশিকা-ধুনচি এলাকার হাজার হাজার মানুষ। দেশে যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন হলেও এই এলাকার মানুষ এখনও অবহেলিত অবস্থায় আছেন। স্থানীয়রা জানান, গ্রাম দুটির ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া ফুলজোড় নদীর ওপর একটি সেতুর দাবি পূরণ হয়নি দীর্ঘ ৪৯ বছরেও। জনপ্রতিনিধিরা বিভিন্ন সময় সেতুটি নির্মাণের আশ্বাস দিলেও তা কার্যকর হয়নি।

প্রতিদিন হাজারো মানুষের যাতায়াত ফুলজোড় নদীর এই খেয়াঘাট দিয়ে। ঝুঁকি নিয়েই তারা পার হচ্ছেন নদী। বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, হাট-বাজারে প্রতিনিয়ত যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বেশি।

সর্বশেষ স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্নার কাছেও সেতুটি নির্মাণের দাবি জানান ভুক্তভোগীরা। তার আশ্বাসে এখনও অপেক্ষমাণ ফুলজোড় নদীর দশশিকা-ধুনচি খেয়াঘাটের উভয় পাড়ের হাজার হাজার মানুষ।

খেয়াঘাটের মাঝি হাসান জানান, নদীর দু’দিকে দুর্গাপুর তেতুলিয়া, ধুনচি, দশশিকা, পেচরপাড়া, সড়াবাড়ি, বড়কুড়া, ছোটকুড়া, মুগবেলাই, ঝাঁটিবেলাই, গাড়াবাড়ীসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষের বসবাস। অথচ স্বাধীনতার পর অর্ধশতাব্দী পার হয়ে গেলেও আজও তাদের যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়নি।

Sirjagonj Photo-1 (1)কামারখন্দ উপজেলার জামতৈল ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন শেখ বলেন, ‘এ এলাকার জনগণ খুবই অবহেলিত। একজন ইউপি চেয়ারম্যানের পক্ষে পাকা সড়ক ও সেতু নির্মাণ আদৌ কি সম্ভব? আমি বারবার সেতু নির্মাণের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে এনেছি। এ কারণে কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে নিয়েছে এবং সেতু নির্মাণের জন্য সয়েল টেস্ট হয়েছে।’

এ বিষয়ে কামারখন্দ উপজেলা চেয়ারম্যান শহীদুল্লাহ্ সবুজ বলেন, ‘স্বাধীনতার আগে থেকেই এই এলাকার মানুষ বর্ষা মৌসুমে নৌকায় পারাপার হচ্ছেন। এখানে একটি সেতু নির্মাণের বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুততম সময়ে একটি সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছেন।’

কামারখন্দ উপজেলা প্রকৌশলী এস এম সানজিদ আহমেদ বলেন, ‘সেতুটি নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যেই সয়েল টেস্ট হয়েছে। অল্পদিনের মধ্যেই টেন্ডার প্রক্রিয়া হবে বলে আমি আশাবাদী।’ সেতুটি নির্মাণ করা হলে এ এলাকার হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হবে বলে তিনি জানান।

সেতুটি নির্মাণের বিষয়ে জানতে চাইলে কামারখন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেরিনা সুলতানা বলেন, ‘বিষয়টি আমি জেনেছি। সরেজমিনে দেখে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’