ববি ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

একটি চক্রের বিরুদ্ধে নানা ধরনের প্রতারণা এবং অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেছেন পঞ্চগড়ের কয়েক গ্রামের মানুষ। মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের কাজীরহাট বাজার সড়কে এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

মানববন্ধনে সাবেক ইউপি সদস্য ফুলু মিঞা, পান ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দুস, আব্দুল করিম, আলমসহ জাকির মাস্টার, তহসিলদার আব্দুল মান্নান, ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিনসহ শতাধিক মানুষ অংশ নেন।

পুলিশ, এলাকাবাসী ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, অমরখানা ইউনিয়নের সোনারবান গ্রামের আফরোজা আকতার ববি, তার স্বামী মো. সফিকুল ইসলাম রিপন, মেয়ে আফসানা মিমি রিংকীসহ একটি চক্র নানা ধরনের প্রতারণার এই অভিযোগ উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে অপহরণের পর মারধর, মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে মুক্তিপণ আদায়, মাদক ব্যবসা, অসামাজিক কার্যকলাপ, প্রলোভন দেখিয়ে মানুষকে ফাঁদে ফেলে অর্থ আদায়, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানিসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। সর্বশেষ গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে তারা সদর উপজেলার ভূষিভিটা এলাকার ভ্যান চালক মো. এনামুল হককে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখে এবং মারপিট করে। ৫০ হাজার টাকা দিলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানায়। অসহায় ভ্যান চালক ১০ হাজার টাকা দিতে রাজি হলে তাকে বাড়িতে ফোন করে টাকা আনার সুযোগ দেয় প্রতারক চক্রটি। বিষয়টি এনামুলের পরিবারের লোকেরা পুলিশকে জানালে গত ১৯ সেপ্টেম্বর ভোর রাতে অমরখানা বোর্ড বাজার এলাকা থেকে মুক্তিপণের টাকাসহ পুলিশ ববিকে আটক করে এবং এনামুলকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

এ ঘটনায় ওইদিনই ভিকটিম এনামুল বাদী হয়ে পঞ্চগড় সদর থানায় প্রতারক ববি, তার স্বামী সফিকুল ইসলাম রিপন ও মেয়ে মিমির বিরুদ্ধে অপহরণ, অবরুদ্ধ করে মারপিট এবং মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মামলার পর পুলিশ ববির মেয়েকে গ্রেফতার করে। পরে পঞ্চগড় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করলে বিচারক দুজনকে জেলহাজতে পাঠান।

অমরখানা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য ফুলু মিঞা বলেন, ‘আফরোজা আকতার ববি এলাকায় একজন মাদক ব্যবসায়ী। এলাকার সাধারণ মানুষকে বিভিন্নভাবে ফাঁদে ফেলে অর্থ আদায়সহ বিভিন্ন অনৈতিক কাজ করে আসছেন। আমরা তার বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে গণআবেদন করেছি। আশা করি প্রশাসন এই প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’

পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল লতিফ মিঞা বলেন, ‘ওই প্রতারক চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। স্থানীয়দের অভিযোগ ও মামলা দায়েরের পর অভিযুক্তদের মধ্যে দুজনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।’