পুনরায় ভোটগ্রহণের দাবিতে গোবিন্দগঞ্জে আধাবেলা হরতাল আহ্বান

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের সিংজানি কেন্দ্রের ঘোষিত ফলাফল বাতিল এবং পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবিতে অর্ধদিবস হরতাল আহ্বান করেছে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা।

মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মহিমাগঞ্জ বাজারসহ স্টেশন এলাকায় এই হরতাল পালিত হবে।

সোমবার  (২৭ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে হরতালের ঘোষণা দেয় স্থানীয় আওয়ামী লীগের পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী রেজওয়ানুর রহমান মুন্সি, স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম কাদির (আনারস প্রতীক) ও রুবেল আমিন শিমুল (মোটরসাইকেল প্রতীক)।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজওয়ানুর রহমান মুন্সি মুঠোফোনে জানান, ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মহিমাগঞ্জ ইউপির সিংজানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নানা অনিয়মের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়। কেন্দ্রটির ঘোষিত ফলাফল বাতিল করাসহ পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবিতে মহিমাগঞ্জে আধাবেলা হরতালের ডাক দেওয়া হয়েছে। এই হরতালে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীসহ মহিমাগঞ্জ ইউপির সর্বসাধারণ সমর্থন জানিয়েছেন।

এরআগে, ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর রাতেই গোবিন্দগঞ্জ প্রেস ইউনিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সিংজানি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. গোলাম কাদির।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সিংজানি কেন্দ্রে আমার কোনও এজেন্টকে থাকতে দেওয়া হয়নি। সকাল ১০টার পর কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তাসহ ভোটগ্রহণে দায়িত্বরতদের সহায়তায় প্রভাব বিস্তার করে ব্যালট পেপারে সিল মারেন প্রতিপক্ষ প্রার্থী আনোয়ারুল ইসলাম প্রধানসহ তার লোকজন। এ কারণে কেন্দ্রটিতে আমার আনারস প্রতীকে অনেক কম ভোট দেখানো হয়েছে। এ ঘটনায় উপজেলা রিটার্নিং অফিসার বরাবরে লিখিত আবেদন করার কথাও জানান তিনি।

তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম প্রধান বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে মহিমাগঞ্জ ইউপির প্রতিটি কেন্দ্রেই ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়। জনগণের ভোটেই চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। তবে পরাজিত প্রার্থীরা মনগড়া নানা অভিযোগ করাসহ মহিমাগঞ্জের শান্তিপ্রিয় পরিবেশে অশান্তি তৈরির পায়তারা করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এদিকে, হরতালে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সকাল থেকেই মহিমাগঞ্জ এলাকায় পুলিশ টহল জোরদার করার কথা জানিয়েছেন গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইজার উদ্দিন।

প্রসঙ্গত, চতুর্থ ধাপে মহিমাগঞ্জসহ গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নে বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্যদিয়ে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এরমধ্যে মহিমাগঞ্জ ইউপির ৯টি ভোট কেন্দ্রের ফলাফল অনুযায়ী চশমা প্রতীকের (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ারুল ইসলাম প্রধান ৭ হাজার ৩১৪ ভোট পেয়ে বেসরকারি ফলাফলে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। প্রতিদ্বন্দ্বী অপর তিন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের রেজওয়ানুর রহমান মুন্সি নৌকা প্রতীকে ৫ হাজার ৩০৯,  স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম কাদির আনারস প্রতীকে ৬ হাজার ৫৫১ ও রুবেল আমিন শিমুল মোটরসাইকেল প্রতীকে ভোট পান ৪ হাজার ৬৯৬। ইউনিয়নে মোট ৩১ হাজার ৭৬৫ ভোটারের মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন ২৪ হাজার ৬৬১ জন।