কোরবানির ঈদের ছুটির পর কক্সবাজার সৈকতে প্রাণ ফিরেছে পর্যটকদের আগমনে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই হঠাৎ সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়তে শুরু করে এবং বিকালে পর্যটকদের পদভারে মুখর হয়ে ওঠে। প্রতিটি পয়েন্টে সমুদ্রস্নান ও আনন্দ মেতেছেন ভ্রমণপিপাসুরা। আর তাদের নিরাপত্তায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন লাইফ গার্ড কর্মীরা ও ট্যুরিস্ট পুলিশ।
বর্ষা মৌসুম তাই কক্সবাজারে পর্যটক আগমন নিয়ে শঙ্কা ছিল সবারই। এ কারণে কোরবানির ঈদের দু’দিন আগে ও পরে আশানুরূপ পর্যটক ছিল না। কিন্তু সেই শঙ্কা কাটিয়ে সমুদ্র সৈকত শহর কক্সবাজারে ভিড় করেছেন লাখো পর্যটক।
সৈকতের সবকটি পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়, সাগরের নোনাজলে চলছে উৎসব। ঢেউয়ের সঙ্গে মিতালি করে টিউব নিয়ে ভাসছেন পর্যটকরা, করছেন সমুদ্রস্নান। বালিয়াড়িতে বসে শিশুর সঙ্গে খেলাতে মেতেছেন মা-বাবা। আবার অনেকেই মজেছেন প্রিয় মুহূর্তগুলো ক্যামেরাবন্দি করতে।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণি পয়েন্টে নিরাপত্তায় নিয়োজিত মোহাম্মদ বেলাল বলেন, ‘ঈদের দিন পর্যটকের আগমন ছিল হাতেগোনা। কিন্তু ঈদের চতুর্থ দিন সকাল থেকে প্রতিটি পয়েন্ট দিয়ে দলে দলে পর্যটকরা সৈকতের নোনাজলে নামছেন। উত্তাল সাগরে গোসলে নামা পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে টাওয়ারে বসে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি বালিয়াড়ি টহলরত কর্মীরা সর্বদা দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত কোনও ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি।’
কক্সবাজার ট্যুরস অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন (টুয়াক) সভাপতি আনোয়ার কামাল বলেন, ‘বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রের শহর কক্সবাজারের প্রতি আসক্তি সহজে কমার কথা নয়। কিন্তু, জীবনধারণের ব্যয় বেড়েছে সবদিকে। তাই হয়তো অনেকে অর্থ সংকুলানে ব্যর্থ হন মাঝে মাঝে। আবার দেশে নতুন নতুন পর্যটন স্পট আবিষ্কার হচ্ছে। এর মাঝে পদ্মা সেতু একটি। এবার ঈদে দর্শনার্থীরা পদ্মা সেতু ও আশপাশের এলাকায় ঘুরেছেন বেশি।’
কক্সবাজার কলাতলী মেরিন ড্রাইভ হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মৌখিম খান বলেন, ‘ঈদের প্রথম চার দিন খুবই হতাশায় কেটেছে। বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে পর্যটক উপস্থিতি বেড়েছে। বেড়েছে রুম বুকিংও। আমাদের ৭০ শতাংশ রুমে গেস্ট উঠেছেন। আরও কিছু পর্যটক আসবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। সব হোটেলেই কম-বেশি পর্যটক অবস্থান করছেন। এতে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের স্বস্তি ফিরেছে।’
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার চৌধুরী মিজানুজ্জামান বলেন, ‘কক্সবাজার ভ্রমণে আসা পর্যটকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সৈকত, হোটেল মোটেল জোন ও পর্যটন স্পটগুলোতে সার্বক্ষণিক পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। এ ছাড়াও সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি রাখা হয়েছে। আশা করি, আগত পর্যটকরা নিরাপদে সবখানে ঘুরছেন।’
উল্লেখ্য, বর্ষা মৌসুমে ঈদের টানা ছুটিতে পর্যটকদের কক্সবাজারমুখী করতে পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউসে চলছে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ছাড়।