১০৭ দিন পর হ্রদে নেমে মিলছে ছোট মাছ

দীর্ঘ ১০৭ দিন পর চিরচেনা রূপে ফিরেছে রাঙামাটির সবচেয়ে বড় মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটি। কাপ্তাই হ্রদে মধ্যরাত থেকে মাছ আহরণ শুরু হয়। রাতভর আহরণ করা মাছ জেলেরা ছোট ছোট বোটে করে নিয়ে আসছেন বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন-বিএফডিসির অবতরণ ঘাটে। তবে প্রথম দিনে ধরা পড়া মাছের আকার ছোট হওয়ায় হতাশ ব্যবসায়ীরা। প্রথম চার ঘণ্টায় ৩৫ মেট্রিক টন মাছ আহরণ করা হয়েছে। বিএফডিসির আশা, গত বছরের চেয়ে এবার রাজস্ব আহরণ বেশি হবে।

বিএফডিসি সূত্র মতে, গত বছর কাপ্তাই হ্রদ হতে ১৭ হাজার ৮৭০ মেট্রিক টন মৎস্য আহরিত হয়। সেখান থেকে রাজস্ব আদায় হয় প্রায় ১১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। ২০২২ সালে হ্রদে ৬০ মেট্রিক টন পোনা অবমুক্ত করা হয়।

javascript:দীর্ঘদিন পর অবতরণ ঘাটটিতে এখন ব্যাপক কর্মচাঞ্চল্য। শ্রমিকরা ব্যস্ত একের পর এক বরফ ভাঙতে। ড্রামে প্যাকিং শেষে আহরিত মাছ ট্রাকে তুলে দেওয়া হচ্ছে। গন্তব্য রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। ব্যবসায়ী, শ্রমিকদের হাঁকডাকে চিরচেনা রূপে ফিরেছে ঘাটটি।

কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন, অবমুক্ত করা পোনা মাছের সুষ্ঠু বৃদ্ধির জন্য প্রতি বছর ১ মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ রাখা হয়। তবে পানি কম থাকায় নিষেধাজ্ঞা বাড়ানো হয় আরও দুই দফায় ১৭ দিন। তবে বিলম্বে হলেও মাছ ধরা শুরু হওয়ায় খুশি জেলেরা।

মধু সেন দাস ও বিমল দাস বলেন, ‘দীর্ঘদিন বেকার সময় কেটেছে। অনেক সময় তিন বেলা খেতে পারিনি। বউ-বাচ্চা নিয়ে কষ্টে দিন কেটেছে। নিষেধাজ্ঞার পর আমারও হ্রদে মাছ শিকারে নেমেছি। এখন পর্যন্ত ভালো মাছ পাওয়া যাচ্ছে। আমরা জেলেরা খুবই খুশি। তবে চাপিলা মাছটি এবার আকারে কিছুটা ছোট।’

প্রথমদিনে ধরা মাছের মধ্যে কাচকি, চাপিলার আধিক্য ছিল বেশি। মাছ আকারে ছোট হওয়ায় হতাশ ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে দীর্ঘ সাড়ে তিন মাস বেকার সময় কাটিয়ে কাজে ফিরে খুশি শ্রমিকরা।

কাপ্তাই হ্রদে মধ্যরাত থেকে মাছ আহরণ শুরু হয়মাছ ব্যবসায়ী মাহফুজ উদ্দিন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ব্যবসা শুরু করলেও মাছের আকার ছোট থাকায় আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো। এই মাছ ঢাকায় বিক্রি করতো পারবো কিনা জানি না। আমাদের দাবি ছিল, আরও কিছুদিন বন্ধ রাখার। তাহলে এই মাছের আকার আরও বড় হতো। আমরা লাভবান হতাম।’

অন্য আরেক ব্যবসায়ী তারেক মাসুদ বলেন, ‘প্রচুর মাছ আসছে ঘাটে কিন্তু মাছের আকার ছোট। এই মাছ বিক্রি করা কঠিন হবে।’

বিএফডিসির রাঙামাটি বিপণনকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রথম দিকে জালে ছোট মাছ বেশি আসে। কয়েকদিন পর এটি স্বাভাবিক হয়ে যায়। হতাশ হওয়ার কিছুই নেই। প্রথমদিনের মতো এভাবে মাছ ধরা অব্যাহত থাকলে গত বছরের চেয়ে রাজস্ব আয় বেশি হবে বলে আশাবাদ বিএফডিসি কর্তৃপক্ষের।’