‘ভুক্তভোগী’ তরুণীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার আসামির মামলা

ঝালকাঠির নলছিটিতে ধর্ষণ মামলার ভিকটিম তরুণীর বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেছেন প্রধান আসামি ইউপি চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান বাচ্চু। রবিবার (২১ আগস্ট) ধর্ষণ মামলার ভিকটিমের বিরুদ্ধে আসামির মামলা দায়েরের বিষয়টি জানাজানি হলে ঝালকাঠি-নলছিটিবাসীসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়।

পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে ইউপি চেয়ারম্যানের দায়ের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মফিজ উদ্দিন সোমবার জানান, মামলার অভিযোগে বাদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কুলকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান বাচ্চু তার ছবি এডিটিংয়ের মাধ্যমে বিকৃত করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার এবং বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে সরবরাহ করার হয়েছে বলে দাবি করেছেন। মামলায় ওই তরুণীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত  আরও চার-পাঁচ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এদিকে ধর্ষণ মামলার ভিকটিম তরুণীর মা বলেন, ‘আমার মেয়েকে বাচ্চু চেয়ারম্যান ধর্ষণ করেছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর থেকে পরিবারের সবাই নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছি। চেয়ারম্যান বিভিন্ন লোক দিয়ে হুমকি-ধামকি দেওয়ায় আমরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। বাচ্চু চেয়ারম্যান আগেও বহু মেয়ের সঙ্গে এমন করেছে। তার কিছু না হওয়ায় সে আমার মেয়েকে ধর্ষণ করে ভেবেছে কিছুই হবে না।’

প্রসঙ্গত, অভিযোগ পাওয়া গেছে, ভিকটিম তরুণীকে ভালো চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কুলকাঠি ইউপি চেয়ারম্যান এইচএম আক্তারুজ্জামান বাচ্চু ২০২১ সালের ১৩ ডিসেম্বর ঢাকার বনশ্রীর একটি বাসায় নিয়ে যান। সেখানে অবস্থানরত মোর্শেদা বেগম (৩৫) নামে এক নারীর সহায়তায় চেয়ারম্যান বাচ্চু ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে মোবাইল ফোনে ভিডিও করে রাখে। এরপর ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি একই বাসায় নিয়ে পুনরায় ধর্ষণ করে। এতে ভুক্তভোগী তরুণী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিষয়টি চেয়ারম্যান বাচ্চুকে জানানোর পর তিনি বিয়ের কথা বলে গর্ভপাত করান।

পরে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানালে গত ১০ ফেব্রুয়ারি ঢাকার খিলগাঁও থানায় চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান বাচ্চু ও তার সহযোগী মোর্শেদা বেগমের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং গর্ভপাতের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী তরুণী।