খামারির ২৫টি গরু মেরে ফেলার হুমকির অভিযোগ

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামে দুই ভাইয়ের একটি গরুর খামার বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি। ইতোমধ্যে দুই দফায় খামারে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেইসঙ্গে খামারের ২৫টি গরু মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন খামারি।

নিশ্চিন্তপুর গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা ও দুই খামারির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাত বছর আগে তিনটি বাছুর দিয়ে গরুর খামার শুরু করেন ওই গ্রামের বাসিন্দা নুর শাহিন ও তার ভাই নুর আলম। বর্তমানে খামারে ১২টি গাভি, ১০টি বাছুর ও তিনটি গরু রয়েছে। সবমিলে গরুগুলোর দাম কোটি টাকার ওপরে। প্রতিটি গাভি ২৫ থেকে ৩০ লিটার দুধ দেয়। করোনা মহামারির সময়ে উদ্যোক্তা তৈরির কার্যক্রমের অংশ হিসেবে দুই খামারি সরকারি সহায়তা পেয়েছেন। পাশাপাশি দুই খামারিকে বিভিন্নভাবে সহায়তা দিয়ে আসছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর।

নুর শাহিন ও নুর আলম জানিয়েছেন, খামার থেকে ৫০০ গজ দূরের কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ তুলেছেন খামারের বর্জ্য ও পানি এলাকার পরিবেশ দূষিত করছে। এমন অভিযোগে স্থানীয় বাসিন্দা মঞ্জুরুল ইসলাম, আবু তাহের, গুলশান, সাকি ও রাজা মিয়া খামারটি বন্ধের ষড়যন্ত্র করছেন। গোবর আর বর্জ্য থেকে নাকি ক্যানসারসহ বিভিন্ন রোগ ছড়ায়—এমন গুজব ছড়িয়ে খামার বন্ধের কথা বলেছেন তারা। আমাদের নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন তারা। গত এক মাসে দুবার খামারে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছেন। খামারের কর্মী চুন্নুকে মারধর করেছেন। এ ঘটনায় গত ২০ জুলাই মিঠাপুকুর থানায় জিডি করেছি। তবে এখন পর্যন্ত পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।

নুর আলম বলেন, ‘খামারটি বন্ধ না করলে সব গরু বিষ খাইয়ে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন তারা। এতে আতঙ্কের মধ্যে আছি।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় বাসিন্দা রাজা মিয়া বলেন, ‘বাড়ির পাশে খামার দেওয়ায় গোবর ও পচা পানির দুর্গন্ধে বাড়িতে বসবাস করা যায় না। আশপাশের বাসিন্দারা অতিষ্ঠ। এজন্য খামারটি সরিয়ে নিতে বলেছি। তবে খামারে ভাঙচুর ও গরু মেরে ফেলার হুমকি দিইনি আমরা।’

উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের ভেটেরিনারি কর্মকর্তা সাইম মাহমুদ বলেন, ‌‘খামারটির দেখভাল করছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর। ওই খামারিকে সরকারি সহায়তা দেওয়া হয়েছে। সে জন্য তাদের কার্যক্রম তদারকি করা হয়। খামার নিয়ে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা যে অভিযোগ করেছেন তা ভিত্তিহীন। বৃষ্টির কারণে খামারের পানি অন্য এলাকায় যেতে পারে। এটি সাময়িক সমস্যা। এতে কারও ক্ষতি হওয়ার প্রশ্নই আসে না। এ সমস্যা সমাধান করবো আমরা। এছাড়া খামারটি সুরক্ষিত। এটি বন্ধ করে দেওয়ার কথা যারা বলছেন তারা ভুল করছেন।’

মিঠাপুকুর থানার ওসি মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‌‘খামারির করা জিডি তদন্ত করছি আমরা। যারা খামার বন্ধের চেষ্টা করছেন কিংবা গরু মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’