হাসপাতালে একমাস ধরে আল্ট্রাসনোগ্রাম বন্ধ

নীলফামারীর সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন থাকলেও একমাস ধরে সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েরা প্রয়োজনীয় সেবা (চেকআপ) না পেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন।

জরুরি প্রয়োজনে রোগীরা হাসপাতালের বাইরে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ক্লিনিক থেকে আল্ট্রাসনোগ্রাম করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিনের সামান্য ত্রুটির কারণে সেটি বন্ধ রেখে বাইরে থেকে চেকআপ করার নির্দেশ দিচ্ছেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

বুধবার শহরের বাঙ্গালীপুর মাস্টারপাড়ার মোকসেদা এবং নয়াটোলা ডিআইবি রোডের সালমা অভিযোগ করে বলেন, ‘আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে গেলে মেশিন খারাপের কথা বলে বাইরে থেকে চেকআপ করার নির্দেশ দেন চিকিৎসকরা। আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিনটি খারাপ হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন শত শত রোগী। এতে গরিব রোগীরা বেশি সমস্যায় পড়ছেন।’

উপজেলার মুন্সিপাড়া মহল্লার রোগী মাহমুদা বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, সরকারি হাসপাতালে কম খরচে সেবা পাওয়ার আশায় আসি। বাইরের ক্লিনিকে আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে ৭০০ টাকা নেয়। আর ডাক্তারের সুপারিশ থাকলে তবুও ৫০০ টাকা নেয়। তবে সরকারি হাসপাতালে কম পয়সায় করা যায়। কিন্তু সঠিক সেবা পাওয়া তো দূরের কথা, এখন বাড়তি ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে।’

হাসপাতাল সূত্র জানায়, আলট্রাসনোগ্রাম মেশিনে সমস্যা আছে, রিপোর্ট পরিষ্কার আসে না। তাই স্থানীয় রোগীরা প্রায় এক মাস সরকারি চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ কারণে বাইরের ক্লিনিকে চড়া মূল্যে আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে হচ্ছে অসহায় দরিদ্র রোগীদের।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের আল্ট্রাসনোগ্রাম বিভাগের অফিস সহকারী সাবিত্রি রায় বলেন, ‘মেশিনটি বরাদ্দের পর চলতি বছরের জুন মাসে সমস্যা দেখা দেয়। টেকনিশিয়ান এসে বারবার মেরামত করে গেলেও এখন ফের অকেজো হয়ে পড়ে আছে। রিপোর্ট স্পষ্টভাবে আসে না। ফলে সঠিক রিপোর্ট প্রদানে সমস্যা হয়। এ কারণে আমরা রোগীদের বিষয়টি বুঝিয়ে বলি। এরপর যদি তারা সম্মত হন, তাহলে এখানেই ডাক্তাররা তাদের চেকআপ করে দেন। নয়তো বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তবে রোগীর লোকজন আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন অকেজো জেনে এখানে আর করতে চায় না, বেশির ভাগই বাইরে থেকে আল্ট্রাসনোগ্রাম করে আসেন।’

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মো. নাজমুল হুদা বলেন, ‘মেশিনে এমনিতে কোনও সমস্যা নেই, তবে প্রিন্ট একটু ঝাপসা হয়। তবুও আমরা বুঝতে পারি। রোগীরা এই অসুবিধা জানার পরও রাজি থাকলে তাদের এখানেই চেকআপ করানো হয়। আর যদি সম্মত না হয় তাহলে বাইরে পাঠিয়ে দিই।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিষয়টি আমরা একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। কিন্তু তারপরও কোনও সুরাহা পাইনি। তাই সমস্যা নিয়েই আল্ট্রাসনোগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি।’