‘আমার মা আবারও নিখোঁজ হননি’

খুলনার রহিমা বেগমের আলোচিত-সমালোচিত অপহরণ ঘটনার পর সম্প্রতি ফের তিনি নিখোঁজ হয়েছেন বলে খবর পাওয়া যায়। তবে এ বিষয়ে সোমবার রাতে তার মেয়ে আদুরী আক্তার বলেন, ‘আমার মা আবারও নিখোঁজ হননি। এটা মিথ্যা কথা।’

আদুরী আক্তার আদালত থেকে রহিমা বেগমকে তার হেফাজতে নিয়ে আসেন। মায়ের আবারও নিখোঁজের সংবাদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার মা কি মার্ডার কেসের আসামি? না আমরা মার্ডার কেসের আসামি? তিনি (রহিমা) কী কোথাও ঘুরতে যেতে পারেন না? মা ফের নিখোঁজ হয়েছেন বলে আমি তো কোথাও ডায়েরি করিনি, কোথাও বলিনি, আমার মা নিখোঁজ হয়েছে! এ ধরনের খবর ঠিক না।’

উল্লেখ্য, রহিমার পরিবারের দাবি, ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে পানি আনতে বাড়ি থেকে নিচে নামেন রহিমা বেগম (৫২)। একঘণ্টা পার হলেও তিনি বাসায় ফিরে আসেননি। পরে মায়ের খোঁজে সন্তানরা সেখানে গিয়ে তার ব্যবহৃত স্যান্ডেল, ওড়না ও কলস রাস্তার ওপর পড়ে থাকতে দেখেন। রাতে সম্ভাব্য সব স্থানে সন্ধান নেওয়ার পর সন্তানরা মাকে পাননি। এরপর সাধারণ ডায়েরি ও পরে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে দৌলতপুর থানায় মামলা দায়ের করে পরিবার। এ মামলার তদন্তকালে পুলিশ ও র‌্যাব ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেফতার করে। তারা হলেন– খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) প্রধান প্রকৌশল কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো. গোলাম কিবরিয়া, রহিমার দ্বিতীয় স্বামী বেল্লাল ঘটক ওরফে বেলাল হাওলাদার, দৌলতপুর মহেশ্বরপাশা বণিকপাড়া এলাকার মহিউদ্দিন, পলাশ, জুয়েল ও হেলাল শরীফ। এ অবস্থায় বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ সেপ্টেম্বর আদালত মামলাটির তদন্তভার পিবিআইতে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে নথিপত্র ১৭ সেপ্টেম্বর বুঝে নেয় পিবিআই খুলনা। এখন এ মামলার তদন্ত করছেন পিবিআই পরিদর্শক আব্দুল মান্নান। ২২ সেপ্টেম্বর রহিমার মেয়ে মরিয়ম আক্তার ওরফে মরিয়ম মান্নান দাবি করেন, তার মায়ের লাশ তিনি পেয়েছেন। তিনি ২৩ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহের ফুলপুরে দিনভর অবস্থান নেন এবং ব্যস্ততম সময় অতিবাহিত করেন। একই সঙ্গে সেখানে ১০ সেপ্টেম্বর উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত এক নারীর লাশকে নিজের মা বলে শনাক্ত করেন এবং ডিএনএ প্রোফাইল করার জন্য সম্মত হন। ২৪ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহের আদালতে ডিএনএ প্রোফাইল করার আবেদন করা হয়। আদালত ২৫ সেপ্টেম্বর শুনানি শেষে ডিএনএ প্রোফাইল করার অনুমতি দেন।

এদিকে, এদিকে ফরিদপুরের বোয়ালমারি উপজেলার সৈয়দপুর থেকে শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে রহিমা বেগমকে জীবিত উদ্ধার করে পুলিশ। ২৫ সেপ্টেম্বর বিকালে আদালতে সোপর্দ করা হলে রহিমা ২২ ধারার জবানবন্দিতে তিনি অপহরণ হয়েছিলেন বলেই দাবি করেন। এরপর সন্ধ্যায় আদালত বাদী আদুরীর জিম্মায় তাকে মুক্তি দেন। এরপর ওই রাতেই মেয়ে মরিয়ম ও আদুরী তাদের মাকে নিয়ে ঢাকায় চলে যান। ঢাকায় রহিমা বেগমের চিকিৎসা চলে। এদিকে ৪ অক্টোবর এ মামলার ৪ জন ও ৭ অক্টোবর আরও একজন আদালত থেকে জামিন লাভ করেন। এক পর্যায়ে পিবিআইর সন্দেহভাজন বেল্লাল ঘটকও জামিন পান। এ অবস্থায় রহিমা বেগমকেও তার মেয়ে আদুরী খুলনায় আনেন।

আরও পড়ুন: