হারানো দুই শিশু ফিরে পেলো মায়ের কোল

ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে হারিয়ে যাওয়া দুই শিশুকে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কাটাখালী থানা পুলিশ। নিখোঁজ সন্তানকে ফিরে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা শিশু দুটির বাবা-মা। রবিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুর ৩টায় কাটাখালী থানার এসআই মিজানুর রহমান শিশু দুটিকে তাদের বাবা-মার হাতে তুলে দেন।

শিশু দুটির নাম উসমান গনি (৮) ও ইব্রাহিম (৮)। উসমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর থানার ভাদুঘরের বাসেদের ছেলে এবং ইব্রাহিম সরাইল থানার কাজীপাড়ার দুলালের ছেলে।

আরএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) রফিকুল আলম জানান, গত ২১ অক্টোবর বিকাল সাড়ে ৪টায় নগরীর কাটাখালী থানার হরিয়ান রুপসীডাঙ্গা এলাকার উজ্জ্বল হোসেন হরিয়ান প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে দুই শিশুকে ঘোরাফেরা করতে দেখেন। উজ্জ্বল শিশু দুটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা কোনও ঠিকানা বলতে পারেনি। পরে তিনি বিষয়টি ৯৯৯-এ ফোন করে জানান। ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে কাটাখালী থানার এএসআই মেজবাহুল হক এবং তার টিম সেখানে গিয়ে শিশু দুটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান। এরপর এসআই মিজানুর রহমান শিশু দুটিকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠান। পরবর্তী সময়ে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে এসআই মিজানুর রহমান টিম নিয়ে হারানো শিশু দুটির পরিবারের সন্ধান পেতে কাজ শুরু করেন।

এদিকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের এসআই ফাতেমাতুজ জোহুরা ইতি শিশু দুটির সঙ্গে বন্ধুসুলভ আচরণ করে তাদের ঠিকানা জানার চেষ্টা করেন। শিশুরা তাদের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া বলে জানায়। আর তেমন কিছু বলতে না পারলেও শিশু উসমান তার মাদ্রাসার এক শিক্ষকের মোবাইল ফোন নম্বর বলতে পারে এবং শিশু ইব্রাহিম তাদের গ্রামের বাড়ি সরাইল কাজীপাড়ার মাজার এলাকায় বলে জানায়। ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার উসমানের শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করে। মাদ্রাসাশিক্ষক উসমানকে চিনলেও শিশু ইব্রাহিমকে চেনেন না বলে জানান।

পরবর্তী সময়ে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার সেই মাদ্রাসাশিক্ষকের মাধ্যমে ওসমানের বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে। আর ইব্রাহিমের পরিচয় জানতে উসমানের বাবা-মায়ের মাধ্যমে সরাইল কাজীপাড়া এলাকার মাজার ও মসজিদে মাইকিং করানো হয়। এভাবে ইব্রাহিমের পরিবার তার সন্ধান পায়। এভাবেই শিশু উসমান ও ইব্রাহিমের পরিবারের খোঁজ পায় আরএমপির ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার।

হারিয়ে যাওয়া শিশু উসমানের বাবা জানান, তিনি গত ২০ অক্টোবর বাড়ি থেকে কাজের জন্য ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন। কিছুক্ষণ পর শিশু উসমানও তাকে অনুসরণ করে বাড়ি হতে বের হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেল স্টেশনে আসে। সেখানে অপর শিশু ইব্রাহিমের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তারা দুজন একসঙ্গে ট্রেনে উঠে কমলাপুর রেল স্টেশনে নামে। আবার তারা বাড়ি ফেরার জন্য ভুল করে রাজশাহীর ট্রেনে ওঠে।