হামলা করে আসামি ছিনতাই, ৫ পুলিশ সদস্য আহত

সাতক্ষীরার দেবহাটায় পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে শরিফুল ইসলাম ওরফে কালু (৪০) নামে ডাকাতি ও অস্ত্র মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত এক আসামিকে ছিনিয়ে নিয়েছে সন্ত্রাসীরা। রবিবার (৬ নভেম্বর) দিনগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার সন্ত্রাসপ্রবণ এলাকা খলিশাখালিতে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় সন্ত্রাসীদের হামলায় পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন– দেবহাটা থানার এসআই শরিফুল ইসলাম ও শোভন দাশ, এএসআই  আব্দুর রহিম গাজী, কনস্টেবল ফরহাদ হোসেন ও শাহজান।

এ ঘটনায় ছিনিয়ে নেওয়া আসামি কালুসহ নয় জনের নাম উল্লেখ করে এসআই শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে দেবহাটা থানায় মামলা করেছেন। মামলার আসামিরা হলো– খলিশাখালিতে অবস্থানরত নাংলা গ্রামের কালু গাজীর ছেলে গফুর মাস্তান (৪৭), নোড়ারচকের আকরাম গাজীর ছেলে ইসমাইল মেম্বর (৪০), তার অপর দুই ভাই মারুফ (৩২)এবং মুজাহিদ (২৭), খলিশাখালিতে অবস্থানরত নাংলার আয়ুব আলী গাজীর ছেলে শরিফুল ইসলাম ওরফে কালু (৪০), বাবুরাবাদের রুহুল আমিনের ছেলে আকরাম (৪৫), নোড়ারচকের আছের উদ্দিনের ছেলে আবুল হোসেন গাজী (৪৭), কালাবাড়িয়ার আবু জাফরের ছেলে আসাদুল ইসলাম (৪০) এবং খলিশাখালীর বাক্কার গাজীর ছেলে মুদি সাইফুল (৪২)।

পেনাল কোডের ১৪৩, ৩৪১, ১৮৬, ৩৩২, ৩৫৩, ২২৫ এবং ৩৪ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।

দেবহাটা থানার ওসি শেখ ওবায়দুল্লাহ বলেন, ‘সম্প্রতি উপজেলার দেবীশহর এলাকা থেকে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে কাটা রাইফেল, সাত রাউন্ড গুলি, দুটি রাম দা ও লাঠিসহ তিন ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়। সে সময় ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় কালু ডাকাতসহ বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী। এ ঘটনায় ডাকাতি ও অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা হলে পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। রবিবার দিবাগত রাতে উপজেলার খলিশাখালিতে ওই অস্ত্র ও ডাকাতি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক কালু ডাকাতের অবস্থান নিশ্চিত করে পুলিশ। রাত আড়াইটার দিকে দেবহাটা থানা পুলিশের একটি দল খলিশাখালিতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসছিল। পুলিশ সদস্যরা খলিশাখালির গফুর মাস্তানের বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছালে গফুর মাস্তান ও ইসমাইল মেম্বরের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী অতর্কিত পুলিশের ওপর হামলা চালায়। সে সময় তারা পুলিশকে মারপিট করে আটক কালু ডাকাতকে ছিনিয়ে নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পাঁচ রাউন্ড রাবার বুলেট এবং তিন রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুড়ে সন্ত্রাসীদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। পরে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে আহত পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়।’

এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে উল্লেখ করে ওসি বলেন, ‘গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর ভোররাতে মুহুর্মুহু গুলি ও বোমা ফাটিয়ে খলিশাখালি এলাকায় ব্যক্তি মালিকানাধীন রেকর্ডীয় ১৩শ' বিঘা জমির ঘের জবরদখলে নেয় ভূমিদস্যু, ডাকাত ও সন্ত্রাসীরা। এরপর থেকে ওই ঘেরটি অপরাধীদের অভয়াশ্রম হয়ে উঠেছে। সংঘবদ্ধ এ অস্ত্রধারীদের আবাসস্থল মূলত খলিশাখালি। তারা দিনের বেলায় খলিশাখালিতে আত্মগোপনে থাকে এবং রাত নামলেই বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতিসহ দস্যুতা করে বেড়ায়। এসব সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের মুখে ওই জনপদের সাধারণ মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে। এমনকি গ্রেফতার করতে গেলে পুলিশের ওপরে হামলা চালাতেও এসব সন্ত্রাসীরা পিছপা হচ্ছে না।’