‘এত উন্নয়ন হয়েছে, প্রবাসীরা দেশে ফিরে নিজের গ্রামই চিনবেন না’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখা দেশের ১৬ কোটি মানুষের নৈতিক অধিকার বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।

শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার ৪নং মনিগ্রাম ইউনিয়নের বিনোদপুর বাজারে নবনির্মিত তিনতলা মার্কেটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মনে-প্রাণে বাঙালি উল্লেখ করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, যিনি মনে-প্রাণে বাঙালি তাঁকে দিয়েই বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন সম্ভব। গত ১৪ বছর ধরে শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়ন করেছেন। সে কারণে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখা বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের নৈতিক অধিকার।

শাহরিয়ার আলম বলেন, যারা কষ্টে জীবনযাপন করে, খেটে খায়, অসহায়, আশ্রয়হীন তাদের নিরাপদ আশ্রয় শেখ হাসিনা। দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য তার ক্ষমতায় থাকা দরকার। কারও ব্যক্তিগত স্বার্থরক্ষার জন্য শেখ হাসিনা রাজনীতি করেন না, তিনি ১৬ কোটি মানুষের ন্যায্য অধিকার দেওয়ার রাজনীতি করেন।

শেখ হাসিনার আমলে দেশে যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রথমবার ক্ষমতায় এসে শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু সেতু করেছিলেন। তার আমলে দেশে এত সেতু হয়েছে যে, এখন দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে সর্বোচ্চ ৬ থেকে ৭ ঘণ্টায় পণ্য নিয়ে ঢাকায় পৌঁছানো যায়। অথচ আগে এমন সময় ছিল যখন রাজশাহী অঞ্চল থেকে ঢাকায় আম পৌঁছাতে ২ থেকে ৩ দিন সময় লাগতো, চট্রগ্রামে পৌঁছাতে কখনও কখনও সাত দিন পর্যন্ত সময় লাগতো। এতে আম পঁচে যেত; এখন আর সেই দিন নেই। শেখ হাসিনা সেই দিন পরিবর্তন করেছেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসম্পূর্ণ স্বপ্ন শেখ হাসিনা বাস্তবায়ন করে চলেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করেন। ২০০৮ সালে তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ হবে, সেই সময়ের মধ্যেই আমরা মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছি। ২০১৮ সালে আমরা বলেছি, আমার গ্রাম, আমার শহর। এখন গ্রামে শহরের সুবিধা পাওয়া যায়। ৫ বছর আগে যারা বিদেশে গেছে, এখন তারা দেশে ফিরলে বলবে, কোথায় এলাম, আমাকে বাড়ি নিয়ে চলো; চিনতেই পারবে না নিজের গ্রাম। এটাই আমাদের উন্নয়ন।

স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও দুর্নীতি কমানোর জন্যই ডিজিটাল বাংলাদেশ উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের স্লোগান নিয়ে হাজির হয়েছিলাম। তখন কেউ বুঝতো না, ডিজিটাল বাংলাদেশ কী? ১৪ বছর পর আজকে সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশ ডিজিটাল হয়েছে। এখন সবাই বুঝে, ডিজিটাল বাংলাদেশ কী। এতে কাজে যেমন গতি এসেছে, তেমনি স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা বেড়েছে; দুর্নীতি কমেছে।

তিনি বিএনপির সমালোচনা করে বলেন, যাদের ভদ্রতা-জ্ঞান নাই, তারা দেশের মানুষের কী উন্নয়ন করবে? এই এলাকায় আমাদের সময়ে হয়েছে, এমন হাজারের বেশি উন্নয়নকাজের তালিকা দেওয়া যাবে। বিএনপির আমলে হয়েছে এমন কোনও বড় নিদর্শন খুঁজে পাওয়া যাবে না। তারা শুধু টাকা তুলে নিয়ে গেছে, কোনও উন্নয়ন করেনি। এমন নজিরও আছে।

আবার শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসলে বাংলাদেশের সব হাটে একটি করে বিল্ডিং হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাড়ে ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে বিনোদপুর বাজারে আজকে যে ধরনের বিল্ডিং হলো ২০ থেকে ২৫ বছর আগে রাজশাহীর সাহেব বাজারে এমন বিল্ডিং ছিল না। এতে বুঝতে হবে কেমন উন্নয়ন হয়েছে দেশে।

অনুষ্ঠানে বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার, উপজেলা প্রকৌশলী নূরুল ইসলাম, বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বক্তৃতা করেন।

বিকালে প্রতিমন্ত্রী চারঘাট উপজেলার নাওদাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধন শেষে এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বইয়ের পাশাপাশি বাস্তবে চলাফেরার ক্ষেত্রে যে ধরনের জ্ঞান প্রয়োজন সেগুলো শেখানোর জন্য শিক্ষকদের আহ্বান জানান।