স্কুলে আসার পথে লাশ হলো শিশু মাসাপ্রু

আর কখনও বই হাতে বিদ্যালয়ে আসবে না শিশু মাসাপ্রু মারমা (৭)। বিদ্যালয় কম্পাউন্ডে সহপাঠীদের সঙ্গে আনন্দে মেতে উঠবে না। দ্রুতগামী অ্যাম্বুলেন্স তার বিদ্যালয়ে আসার পথ চিরদিনের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার গবামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, প্রতিদিনের মতোই বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়েছিল মাসাপ্রু। বিদ্যালয়ের সামনে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক মহাসড়ক পার হওয়ার সময় লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সের চাপায় গুরুতর আহত হয় সে। পরে স্থানীয়রা তাকে মানিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মহিউদ্দিন মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত মাসাপ্রু মারমা মানিকছড়ির দক্ষিণ ফকিরনালা এলাকার আবাইশে মারমা ও ম্রাচাইন্দা মারমার মেয়ে। সে মানিকছড়ির গবামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।

গবামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমি অফিসে বসা অবস্থায় মাঠে স্কুলমুখী ছাত্রদের চেঁচামেচি শুনে বের হই। দেখি, রাস্তায় অসংখ্য মানুষ ভিড় করেছে। কাছে যেতেই দেখি, কালো পিচঢালা রাস্তা রক্তে একাকার! কীভাবে কী হলো বুঝে উঠতে পারছি না।’

স্কুলছাত্রী নিহতের খবর নিশ্চিত করে মানিকছড়ি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আওলাদ হোসেন বলেন, ‘লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সটির চালক জনরোষ ঠেকাতে পালিয়ে যায়। অভিভাবকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া নেবে পুলিশ।’

এদিকে মেধাবী শিক্ষার্থী মাসাপ্রু মারমার অকাল মৃত্যুতে শিক্ষক ও সহপাঠীরা সংক্ষুব্ধ ও মর্মাহত হয়ে পড়েছেন। শোকের ছায়া নেমে এসেছে প্রাণোচ্ছল বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। শোকে ক্লাস না করে বাড়ি ফিরে গেছে অনেক সহপাঠী।