শুদ্ধভাবে জাতীয় সংগীত গাইতে না পারায় শিক্ষককে শোকজ করলেন ডিসি

শুদ্ধভাবে জাতীয় সংগীত গাইতে না পারায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. শাহগীর আলম এ শোকজ করেন।  

এ সময় বিদ্যালয় সম্পর্কে খোঁজ খবর না রাখা এবং জেলা প্রশাসকের পরিদর্শনের সময় অনুপস্থিত থাকায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেনকেও শোকজ করা হয়।

অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম সোহরাব হোসেন। তিনি বিদ্যালয়ের শরীর চর্চার বিভাগের শিক্ষক। 

এ বিষয়ে মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শশাঙ্ক রায় চৌধুরী বলেন, ‘জেলা প্রশাসক স্যার হঠাৎ করেই বিদ্যালয়ে আসেন। এ সময় তিনি বিদ্যালয়ের মাঠে শরীর চর্চা বিভাগের শিক্ষক সোহরাব হোসেনকে পেয়ে তার নাম-পরিচয় জিজ্ঞাসা করেন। একপর্যায়ে তাকে শুদ্ধভাবে জাতীয় সংগীত গাইতে বলেন। তিনি হয়তো হতভম্ব হয়ে যাওয়ার কারণে সঠিকভাবে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে পারছিলেন না। এ সময় ডিসি স্যার তাকে প্রশ্ন করেন, “আপনি সঠিকভাবে জাতীয় সংগীত গাইতে না পারলে শিক্ষার্থীদের কীভাবে শেখাবেন?” ’

শরীর চর্চা বিভাগের শিক্ষক সোহরাব হোসেন বলেন, ‘ডিসি স্যার হঠাৎ করে মাঠে প্রবেশ করেন। এ সময় তিনি বিদ্যালয়ের মাঠে গরু চরানো দেখে কিছুটা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। একপর্যায়ে আমাকে ডেকে আনেন এবং আমার নাম-পরিচয় জানতে চান। পরিচয় দেওয়ার পর আমাকে জাতীয় সংগীত গাইতে বলেন। কিন্তু আমি হতভম্ব হয়ে যাই। যার কারণে সঠিকভাবে জাতীয় সংগীত গাইতে পারছিলাম না। তাই ডিসি স্যার আমার কাছে কারণ জানতে চেয়েছেন কেন শুদ্ধ এবং সঠিকভাবে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে পারিনি।’

এ দিকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেন বলেন, ‘ডিসি স্যার পরিদর্শনে আসবেন বিষয়টি আমার জানা ছিল না। জানলে অবশ্যই আমি ওই বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকতাম।’ শোকজ করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনও কিছু জানি না।’

জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম বলেন, ‘কোমলমতি শিক্ষার্থীরা কী শিখছে? তারা আদৌ দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে কিনা সে বিষয়টি জানার জন্যেই আমি বিদ্যালয় পরিদর্শনে যাই। এ সময় মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শরীর চর্চা বিভাগের শিক্ষক সোহরাব হোসেন স্যারকে জিজ্ঞাসা করলাম আপনি তো শিক্ষার্থীদের শরীর চর্চা করান। বিদ্যালয়ে অ্যাসেম্বলির সময় জাতীয় সংগীতও গাইতে সহযোগিতা করেন। আপনি কি জাতীয় সংগীতের কয়েক লাইন গেয়ে শুনাবেন? কিন্তু তিনি শুদ্ধ ও সঠিকভাবে জাতীয় সংগীত গাইতে পারছিলেন না। তখন আমি তাকে প্রশ্ন করলাম, “আপনি নিজেই সঠিকভাবে জাতীয় সংগীত গাইতে পারলেন না শিক্ষার্থীদের কি শিখাবেন?” এ বিষয়টি তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে।’

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ‘বিদ্যালয় পরিদর্শনের বিষয়টি আগেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তারও নিশ্চয়ই জানা ছিল। বিদ্যালয় পরিদর্শনের সময় তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। তাই তার অনুপস্থিত থাকার কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে।’