চা শিল্পের উন্নয়নে মালিক-শ্রমিক ঐকমত্যের বিকল্প নেই: বাণিজ্যমন্ত্রী

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ‘চা শিল্পের উন্নয়নে মালিক-শ্রমিক ঐকমত্যের বিকল্প নেই। আমাদের প্রতিবছর ৫-৭ শতাংশ চায়ের উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু মানুষের চাহিদার চেয়ে উৎপাদন কম। যার কারণে দেশের বাইরে চা পাঠাতে পারছি না।’

রবিবার (৪ জুন) দুপুরে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল বিটিআরআই উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত জাতীয় চা দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।  

এ অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের ১৭ কোটি মানুষ প্রতিদিন ১৭ কোটি কাপ চা খায়। চা আমাদের জীবনের একটি অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চা ছাড়া আমরা চিন্তা করতে পারি না। আমাদের দেশে বেশি প্রচলিত পানীয় চা।’ 

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চা শ্রমিকদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। শ্রমিকদের বেতনের সমস্যা সমাধান করে দিয়েছেন তিনি। দৈনিক নিম্নতম ১৭০ টাকা মজুরি করেছেন। তিনি চা শ্রমিকদের কল্যাণে আরও নানাবিধ পদক্ষেপ নিয়েছেন।’ 

বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘দেশের চা শিল্পে রয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্পর্শ। তিনি ১৯৫৭ সালের ৪ জুন চা বোর্ডের বাঙালি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেন। তার আমলে স্থাপিত হয়েছিল টি রিসার্চ স্টেশন। যা চা শিল্পের উন্নয়নে কাজ করে। স্বাধীনতার পর দেশের চা শিল্পের উন্নয়নে তিনি কাজ করেছেন। তাই এ শিল্পকে আমরা আরও অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।’

দেশের চা শিল্পের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনন্য অবদান রাখায় প্রথমবারের মতো চালু করা ‘জাতীয় চা পুরস্কার-২০২৩’ দেওয়া হয়। আট ক্যাটাগরিতে এক ব্যক্তি ও সাতটি প্রতিষ্ঠানকে এ পুরস্কার হস্তান্তর করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

আট ক্যাটাগরিতে পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলো, একর প্রতি সর্বোচ্চ উৎপাদনকারী চা বাগান শ্রীমঙ্গল উপজেলার ফিনলে টি কোম্পানির ভাড়াউড়া চা বাগান, সর্বোচ্চ গুণগত মানসম্পন্ন চা উৎপাদনকারী বাগান হবিগঞ্জের মধুপুর চা বাগান, শ্রেষ্ঠ চা রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান আবুল খায়ের কনজ্যুমার প্রোডাক্টস লিমিটেড, শ্রেষ্ঠ ক্ষুদ্রায়তন চা উৎপাদনকারী পঞ্চগড়ের আনোয়ার সাদাত সম্রাট, শ্রমিক কল্যাণের ভিত্তিতে শ্রেষ্ঠ চা বাগান শ্রীমঙ্গলের জেরিন চা বাগান, বৈচিত্র্যময় চা পণ্য বাজারজাতকরণের ভিত্তিতে শ্রেষ্ঠ কোম্পানি পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার কাজী অ্যান্ড কাজী টি এস্টেট লিমিটেড, দৃষ্টিনন্দন ও মানসম্পন্ন চা মোড়কের ভিত্তিতে শ্রেষ্ঠ কোম্পানি গ্রিন ফিল্ড টি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং শ্রেষ্ঠ চা পাতা চয়নকারী (চা শ্রমিক) চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার নেপচুন চা বাগানের শ্রমিক উপলহ্মী ত্রিপুরা।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম, বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতির (এফবিসিসিআই) সভাপতি জসিম উদ্দিন, টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি শাহ মঈনুদ্দিন হাসান এবং বাংলাদেশীয় চা সংসদের সভাপতি কামরান টি রহমানসহ অনেকে।