একদিনে কাঁচা মরিচের দাম কমলো কেজিতে ৬০ টাকা

দিনাজপুরের হিলিতে কমতে শুরু করেছে কাঁচা মরিচের দাম। একদিনের ব্যবধানে দেশীয় কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে ৬০ টাকা কমেছে। গতকাল যে কাঁচা মরিচ ২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল সেই কাঁচামরিচ বর্তমানে ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম কমায় স্বস্তি ফিরেছে নিন্ম আয়ের মানুষের।

হিলি বাজারে কাঁচা মরিচ কিনতে আসা শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘কয়েকদিন আগে কাঁচা মরিচের দাম নিয়ে যে অস্থিতিশীল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল তা দেশের মানুষ টের পেয়েছে। দাম বাড়তে বাড়তে হিলিতেই ৫০০ টাকায় উঠে গিয়েছিল দেশের অন্যান্য স্থানে আরও বেশি দামে বিক্রি হয়েছিল। বাড়তি দামের কারণে কয়েকদিন কাঁচামরিচ খাওয়াই বাদ দিয়েছিলাম। তবে গত কয়েকদিন ধরে কাঁচা মরিচের দাম কমতে শুরু করেছে এতে আমাদের মতো নিন্ম আয়ের মানুষজনের জন্য সুবিধা হয়েছে।’

অপর ক্রেতা মেহেরুন আকতার বলেন, ‘বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম একটার পর একটা যেনও বেড়েই চলেছে। এই বাজারে কিছুটা স্বস্তির খবর এবার কাঁচামরিচের দাম কমতে শুরু করেছে। আগের দিন যেখানে ২৪০ টাকা কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়েছিল সেই কাঁচামরিচ আজ ১৮০-২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।’

হিলি বাজারের কাঁচা মরিচ বিক্রেতা বিপ্লব শেখ বলেন, ‘তীব্র খরা ও অনাবৃষ্টির কারণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কাঁচা মরিচের গাছ ও ফুল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কাঁচামরিচের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। এতে দেশের বাজারে চাহিদার তুলনায় পণ্যটির সরবরাহ বাড়ায় দাম বেড়ে অস্থিতিশীল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি দেয়। ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি শুরু হওয়ায় বাজারে এর সরবরাহ বাড়তে শুরু করেছে। যার কারণে দেশীয় কাঁচা মরিচের ওপর চাপ আগের চেয়ে কমতে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে মোকামগুলোতে আগের তুলনায় দেশীয় কাঁচা মরিচের সরবরাহ বাড়ায় দাম কমতে শুরু করেছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পার্শ্ববতী পাঁচবিবি মোকাম থেকে কাঁচা মরিচ কিনে এনে বাজারে বিক্রি করছি। মোকামে যেদিন যে দামে কিনছি সেই মোতাবেক বাজারে এনে বিক্রি করছি। তবে গত কয়েকদিন ধরেই দাম কমতির দিকে রয়েছে। আমরা মোকামে গতকাল ২২০ টাকা কেজি দরে ক্রয় করে খরচসহ লাভ মিলিয়ে বাজারে ২৪০টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছিলাম। আজ মোকামে দাম আরও কিছুটা কমেছে। বর্তমানে প্রতি কেজি প্রকারভেদে ১৬০-১৮০ টাকা দরে কিনে ১৮০-২০০ টাকা দরে বিক্রি করছি। তবে নতুন কাঁচা মরিচ উঠতে শুরু করলে বাজারো পণ্যটির সরবরাহ যেমন বাড়বে তেমনি দাম আরও কমে আসবে।’ 

এদিকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে কাঁচা মরিচ আমদানি হলেও সেগুলো রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যায়। স্থানীয় হিলি বাজারে আমাদনিকৃত কাঁচা মরিচের কোনও সরবরাহ নেই। দেশীয় কাঁচা মরিচ দিয়েই স্থানীয় বাজারের চাহিদা মেটানো হচ্ছে।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর দিনাজপুরের সহকারি পরিচালক মমতাজ বেগম বলেন, ‘পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি রুখতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। কেউ যেনও অহেতুক কোনও পণ্যের দাম বাড়াতে না পারে সেটি রুখতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অভিযানে আমরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের ম্যামো দেখে নিশ্চিত হচ্ছি তারা কি দামে কিনছেন আর কি দামে বিক্রি করছেন। কারও এ ক্ষেত্রে অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে ও বাড়তি দামে পণ্য বিক্রয়ের সত্যতা মিলছে তাদের আর্থিক জরিমানা করা হচ্ছে।’