পানিবন্দি এলাকায় পৌঁছেনি পর্যাপ্ত ত্রাণ

পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা পৌঁছেনি চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় পানিবন্দি লোকজনের কাছে। অতি বৃষ্টিতে ভেঙে গেছে অনেক বাড়িঘর। ফলে চরম দুর্বিষহ অবস্থায় দিন কাটছে তাদের। কেউ কেউ ঘর ছেড়ে ঠাঁই নিয়েছেন আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে। কেউ উঠেছেন আশ্রয়কেন্দ্রে।

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে ৯০ শতাংশ ঘরে কম-বেশি পানি ঢুকেছে। আমার ঘরেও কমপক্ষে চার ফুট পানি। আমরা আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। আমার চাচার বাড়ি ভেঙে গেছে। এলাকার অধিকাংশ ঘরের লোকজন অন্যত্র সরে গেছেন। সব বাড়ির চুলা পানিতে ডুবে যাওয়ায় রান্না হচ্ছে না। কেউ নৌকা নিয়ে কিংবা কোমর সমান পানি ডিঙিয়ে খাবারের সন্ধানে বের হচ্ছেন। মানুষ খাদ্য ও পানির সংকটে আছে। সরকারি কোনও খাবার এখন পর্যন্ত এ এলাকায় পৌঁছেনি।’

একই এলাকার নুরুল ইসলাম বলেন, ‘খাদ্য সংকটের পাশাপাশি বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। গ্রামের অধিকাংশ মানুষ নলকূপের পানির ওপর নির্ভরশীল। বন্যায় সব নলকূপ ডুবে গেছে। এ কারণে বিশুদ্ধ পানির সংকট তীব্র হয়ে উঠেছে।’

ঘরের মধ্যে পানিএ প্রসঙ্গে আমিরাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এস ইউনুস বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের অধিকাংশ ঘরে পানি ঢুকেছে। ঘরে থাকার অবস্থা নেই। এ কারণে কেউ কেউ আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে উঠেছেন। যারা যাননি তারা আশ্রয় কেন্দ্রে এসেছেন। বন্যায় ইতোমধ্যে আমার ইউনিয়নে ৩০০টি ঘর ধসে গেছে। এর মধ্যে দুটি সেমি পাকা, বাকিগুলো মাটির ঘর। তিন জন বন্যার পানির স্রোতে ভেসে গেছেন। একজনের লাশ উদ্ধার হলেও দুজনের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। কী এক অবস্থার মধ্যে দিয়ে দিন কাটছে তা বলে বোঝানো যাবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকারি সাহায্য হিসেবে আমাকে এক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যেগুলো এখনও তুলতে পারিনি। আজ ১০০ প্যাকেট শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। সেগুলোর সঙ্গে কিছু জিনিস আমি কিনে দিয়েছি। এ ছাড়া আমার পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা মানুষগুলোর জন্য রান্না করা খিচুড়ি দিয়েছি।’

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. ছাইফুল্লাহ মজুমদার বলেন, ‘বন্যাকবলিত উপজেলার জন্য ৩৭০ টন চাল , সাড়ে সাত লাখ টাকা এবং সাড়ে তিন হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার এবং পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট এবং বিস্কুট দেওয়া হয়েছে।’