বরিশাল নগরীর ব্যস্ততম এলাকা ফজলুল হক অ্যাভিনিউয়ের সিটি প্লাজা নামে মার্কেটের চতুর্থ তলার ছাদ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় রিয়া মণি নামে এক পথশিশুর (১২) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। স্থানীয়দের ধারণা, তাকে হত্যা করে সেখানে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
মৃত রিয়া মণি বরিশাল নগরীর পলাশপুর এলাকার সোহরাব হোসেন হাওলাদারের মেয়ে।
ঘটনাস্থল থেকে কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘দুপুরে জাতীয় জরুরি সেবা ত্রিপল নাইন থেকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। এরপর পুলিশ ফোর্স নিয়ে সিটি প্লাজার ছাদে গিয়ে নির্মাণাধীন শেডের লোহার অ্যাঙ্গেলের সঙ্গে ঝুলন্ত রিয়ার লাশ পাওয়া যায়। লাশ নামিয়ে মর্গে পাঠানো হয়। রিয়া সারাক্ষণ লঞ্চঘাটের পথশিশুদের সঙ্গেই থাকতো বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। তাকে পথশিশু বলা হলেও নগরীতে তার বাবার বাসা রয়েছে।’
প্রত্যক্ষদর্শী রুবেল পারভেজ বলেন, ‘লাশ উদ্ধারকালে দেখা গেছে, রিয়া যেখানে ঝুলছিল সেখানে তার পা একটি ড্রামের ওপর ভাজ করা ছিল। এ কারণে প্রত্যক্ষদর্শীদের ধারণা তাকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।’
এ ব্যাপারে ওসি আনোয়ার বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে রিয়া আত্মহত্যা করেছে। আর প্রত্যক্ষদর্শীরা যে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছেন তা আমরাও দেখেছি। তবে তার শরীরের কোনও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসার পর রিয়ার মৃত্যু কী কারণে তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।’
মরদেহ শনাক্তকারী রিয়ার বোন সালমা আক্তার বলেন, ‘তিন বোন রেখে তাদের মা মারা যাওয়ার পর দ্বিতীয় বিয়ে করেন বাবা। ওই বিয়ের পর থেকে রিয়া বাসা ছেড়ে দেয়। সে লঞ্চঘাটে থাকা পথশিশুদের সঙ্গেই থাকতো। মাঝে মধ্যে বাসায় এলেও আবার পথশিশুদের কাছে চলে যেতো। সর্বশেষ বুধবার সন্ধ্যায় বাসায় এসে আবার চলে যায়।’
সালমা আরও জানান, আজ দুপুরে ফোন করে তাকে ঘটনাস্থলে ডেকে নেওয়া হয়। তিনি গিয়ে বোনের লাশ শনাক্ত করেন। রিয়া আত্মহত্যা করার মেয়ে না। তা করলে অনেক আগেই করতো।
সিটি প্লাজা মার্কেটের ব্যবসায়ী আফজাল হোসেন বলেন, ‘মার্কেটের চতুর্থ তলায় যে-কেউ উঠতে পারতো। কারণ কোনও গেট ছিল না। আর রিয়া লঞ্চঘাটের পথশিশুদের নিয়ে ফজলুল হক অ্যাভিনিউ এলাকায় ঘুরতো। তারা ড্যান্ডি আসক্ত ছিল। মঙ্গলবার রাতেও রিয়াকে ফজলুল হক অ্যাভিনিউ এলাকায় ঘুরতে দেখা গেছে।’