খুলনায় এক রাতে পৃথক ঘটনায় গুলি ও গলা কেটে দুই জনকে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে রূপসার রাজাপুর এলাকায় সাব্বির, সাদ্দাম ও মিরাজ নামের তিন যুবককে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় সাব্বির ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এদিকে নগরীর হরিণটানা থানাধীন রাজবন্ধ এলাকার দক্ষিণ পাড়ায় গলা কেটে বাবলু দত্ত (৫০) নামের এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে পৃথকভাবে ঘটনা দুটি ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে রাজাপুর এলাকার সোহাগের বাড়িতে সাব্বির, মিরাজ ও সাদ্দাম যান। পরে হঠাৎ গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায়। গুলিতে সাব্বির ঘটনাস্থলে মারা যান। সাদ্দামকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। গুলিটি মাথার পেছনের অংশে লাগায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় নেওয়া হয় তাকে। এদিকে মিরাজের কোমরের পেছনে, নিচের অংশে গুলি লাগায় খুলনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে পালিয়ে যান।
সূত্রে জানা যায়, খুলনা চানমারি ও লবণচরা এলাকার সন্ত্রাসী আশিক গ্রুপের ১০-১২ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী এই কিলিং মিশনে অংশ নেয়। মাদক সংক্রান্ত বিষয়ে অভ্যন্তরীণ গ্রুপিং সৃষ্টি ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে বলে জানায় সূত্রটি।
রূপসা থানার ওসি মাহফুজুর রহমান বলেন, মিরাজ ও সাব্বির দুই জনই গ্রেনেড বাবুর প্রধান সহযোগী। স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী সোহাগের বাড়িতে মাদক ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয় অভ্যন্তরীণ ঝামেলা হওয়ায় সাব্বির, মিরাজ ও সাদ্দামকে গুলি করা হয়। সাব্বির ঘটনাস্থলে মারা যায়। সাদ্দামকে অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় নেওয়া হয়। এ ছাড়া মিরাজ একটি হাসপাতাল থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চিকিৎসা নিয়ে পালিয়ে যায়। সাদ্দাম নগরীর সোনাডাঙ্গা থানাধীন সোনার বাংলা গলির নুর ইসলামের ছেলে। সে থাই মিস্ত্রি বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তিনি রাজাপুর এলাকা বিয়ে করেছেন।
এদিকে সূত্রে জানা যায়, বাইরের কাজ শেষ করে বাবলু দত্ত মোটরসাইকেলে করে নগরীর বাড়িতে ফিরছিলেন। এ সময়ে কয়েকজন দুর্বৃত্ত গতিরোধ করে ফাঁকা একটি প্লটের মধ্যে নিয়ে যায়। প্লটের মধ্যে নিয়ে গিয়ে তাকে গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যায়। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
হরিণটানা থানার ওসি শেখ খায়রুল বাসার বলেন, কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা এখন বলা সম্ভব হচ্ছে না। ধারালো ছুরি দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে। লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত শেষে ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নিহত বাবুল দত্ত দক্ষিণপাড়া এলাকার বাসিন্দা অমূল্য দত্তের ছেলে। নিহত ওই ব্যক্তি বালু এবং জমির ব্যবসা করতেন বলে জানা গেছে।