শ্রমিকদের বিক্ষোভের পর ট্রাফিক পুলিশের দুই কর্মকর্তা প্রত্যাহার

চাঁদাবাজি ও শ্রমিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগে নেত্রকোনায় ট্রাফিক পুলিশের দুই সদস্যকে প্রত্যাহারের দাবিতে নেত্রকোনায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন সিএনজি-অটোরিকশা শ্রমিকরা। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত নেত্রকোনা পৌরসভার মূল সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। এ সময় পুরো শহরে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। যাত্রী সাধারণসহ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।

পরে শ্রমিকদের প্রতিবাদের কারণে অভিযুক্ত ট্রাফিক পরিদর্শক (টিআই) মৃদুল ও টিএসআই আকবর হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়। পুলিশ সুপার ফয়েজ আহমদের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবলী সাদিক তাদের প্রত্যাহারের বিষয়টি শ্রমিকদের সামনে ঘোষণা দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।

নেত্রকোনা অটো-টেম্পু ও সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘আমাদের সিএনজি চালকরা রাস্তায় বের হলেই মামলা দেওয়া হয় এবং চাঁদার জন্য নানাভাবে হয়রানি করা হয়। চাঁদা না দিলেই শ্রমিকদের ওপর নানাভাবে নির্যাতন করতেন ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মৃদুল ও টিএসআই আকবর। বিষয়টি আমরা বারবার পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানালেও অদৃশ্য কারণে তাকে কিছু বলেননি তারা। ট্রাফিকের নির্যাতন দিন দিন বেড়েই যাচ্ছিল। তাই আমরা আজ তাদের প্রত্যাহারের জন্য রাস্তায় এসেছি।’

একাধিক শ্রমিক বিক্ষোভ করার সময় বলেন, ‘আমরা রাস্তায় বের হলেই মামলা দেওয়া হয়, আবার চাঁদা দিলেই সেই মামলার জরিমানা কমিয়ে দেওয়া হয়। যা আগে নেত্রকোনায় ছিল না। এই টিআই আসার পর থেকে সড়কে চাঁদাবাজি বৃদ্ধি পেয়েছে।’

ঘটনাস্থল থেকে নেত্রকোনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শিবলী সাদিক বলেন, ‘আমরা শ্রমিক অসন্তোষের খবর শুনে এসেছি। গতকাল শ্রমিকদের সঙ্গে ট্রাফিক পুলিশের মারধরের ঘটনা ঘটেছিল। এ নিয়ে থানায় একটি মামলায় হয়েছে। আজকে শ্রমিকরা হঠাৎ সকালে ট্রাফিক পুলিশের দুই কর্মকর্তার প্রত্যাহারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন। পরে পুলিশ সুপারের নির্দেশে অভিযুক্তদের প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলে তারা অবরোধ তুলে নেন।’

উল্লেখ্য, অভিযোগ পাওয়া গেছে, সোমবার নেত্রকোনা জেলা শহরের কুড়পার এলাকায় ট্রাফিক পুলিশের এসআই আকবরের সঙ্গে সিএনজি ড্রাইভারদের চাঁদা আদায় নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে মারধর করেন ট্রাফিক পুলিশের অভিযুক্ত কর্মকর্তারা। পরে তিনজন সিএনজি শ্রমিক ও ট্রাফিক পুলিশ একজন আহত হন। এ ঘটনায় পুলিশ মামলা দায়ের করে। ওই মামলা প্রত্যাহার এবং সড়কে ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজি এবং অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের প্রত্যাহারের দাবিতে রাস্তায় নামেন শ্রমিকরা।