গুদাম থেকে ১ কোটি ১৫ লাখ টাকার চাল গায়েব, খাদ্য পরিদর্শক আটক

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার রসুলপুর খাদ্যগুদাম থেকে রাতের আঁধারে ২৫০ টন চাল সরিয়ে ফেলার অভিযোগে উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক সৈয়দ সফিউল আজমকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) দুপুরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আটক করা হয়।

বিকালে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, খাদ্য গুদামের ৪ নম্বর ভবনটি সিলগালা করেছে উপজেলা প্রশাসন। বাইর থেকে কোনও গাড়ি এবং খাদ্যগুদামের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের গুদাম এলাকায় প্রবেশ নিষেধ করা হয়েছে। গুদাম থেকে গায়েব হওয়া ২৫০ মেট্রিক টন চালের বাজারমূল্য এক কোটি ১৫ লাখ টাকা। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।

গজারিয়া উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আনোয়ার পারভেজ বলেন, ‘দায়িত্ব গ্রহণের পর গত ১৯ মার্চ আমি রসুলপুর খাদ্যগুদাম পরিদর্শনে যাই। ৪ নম্বর ভবন পরিদর্শনের সময় মজুতকৃত চালের পরিমাণ অনেক কম দেখতে পাই। মজুতকৃত চালের পরিমাণ ৪৩১ মেট্রিক টন হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে অনেক কম পাওয়া যায়। বিষয়টি আমার সন্দেহ হলে খোঁজখবর নিয়ে নিশ্চিত হই এখান থেকে অধিকাংশ চালের বস্তা সরিয়ে ফেলা হয়েছে। গত ১২ মার্চ থেকে গুদামের হাজিরা খাতায় তার স্বাক্ষরও নেই। বিষয়টি লিখিত আকারে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। এ ঘটনায় এক খাদ্য পরিদর্শককে আটক করেছে পুলিশ। এতে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা, সেটি আমরা খতিয়ে দেখছি।’

আটকের বিষয়ে জানতে চাইলে খাদ্য পরিদর্শক সৈয়দ সফিউল আজম বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কোনও কথা বলবো না। আমার যা বলার, আমি তা বলে দিয়েছি সংশ্লিষ্টদের।’

এ ব্যাপারে গজারিয়ার সাবেক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, ‘গত কয়েকদিন আগে গজারিয়া থেকে বদলি হয়ে অন্যত্র চলে এসেছি। ওই খাদ্যগুদাম থেকে চাল চুরির বিষয়ে কিছু জানি না।’

গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোহিনুর আক্তার বলেন, ‘সদ্য যোগদান করা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক লিখিত আকারে বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। গুদামে মজুতকৃত চালের পরিমাণে বড় ধরনের গরমিল পাওয়া গেছে। দায়িত্বে থাকা খাদ্য পরিদর্শক সৈয়দ শফিউল আজমকে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।’

গজারিয়া থানার ওসি মো. রাজিব খান বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা খাদ্যগুদামের এক কর্মকর্তাকে হেফাজতে নিয়েছি। তদন্তসাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’