বরগুনার তালতলী উপজেলায় রাতের আঁধারে ১৯টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ ৪টি বসতঘর আগুনে পুড়ে গেছে। এতে নিঃস্ব হয়ে গেছে কয়েকটি পরিবার। তিন থেকে সাড়ে তিন কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) দিবাগত রাতে বরগুনার তালতলী উজেলার কড়াইবাড়িয়া বাজারে এ ঘটনা ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতে হঠাৎ কড়াইবাড়িয়া বাজারের একটি পেট্রোলের দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তেই তা ছড়িয়ে পড়ে চারপাশের দোকান ও বসত ঘরে। পরে স্থানীয়রা তালতলী ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। তালতলী ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঘটনাস্থলে এসে আগুন নেভাতে গেলে গাড়িতে পানি না থাকায় তারা ব্যর্থ হয়।
পরে পাশের ডোবা থেকে মেশিনের মাধ্যমে পানি দেওয়ার চেষ্টা করলে মেশিনে ফুয়েল না থাকায় তাও ব্যর্থ হয়। পরে খবর দেওয়া হয় আমতলী ফায়ার সার্ভিসকে। খবর পেয়ে আমতলী ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে এসে প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে ততক্ষণে পুড়ে যায় মুদি-মনিহারি, হার্ডওয়্যার, ফার্মেসি ও তেলের দোকানসহ ১৯টি দোকান এবং ৪টি বসতঘর। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, তালতলী ফায়ার সার্ভিসের অপেশাদার কর্মকাণ্ডের কারণে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। পরে আমতলী ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয় বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের গাফিলতির কারণে এমন অবস্থা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা যদি নিজেরা সব সময় প্রস্তুত না থাকেন, তাহলে কী করে চলবে। এই দায় ফায়ার সার্ভিসকে নিতে হবে।’
কড়াইবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পনু সিকদার বলেন, ‘কড়াইবাড়িয়া বাজারে এর আগে কখনও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেনি। এই ঘটনায় অন্তত সাড়ে তিন কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। কমপক্ষে ২৫ জন ব্যবসায়ী পথে বসে গেছেন। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা কচুরিপানার পুকুরে পানির পাম্প বসালে কিছুক্ষণ পর পাম্প বন্ধ হয়ে যায়। পরে আমতলী ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।’
এ বিষয়ে তালতলী ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা এস এম নুরুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের স্টেশন থেকে দূরে গেলে আমাদের পানি ভর্তি গাড়িটি নিয়ে যাওয়া হয় না। এ কারণে কড়াইবাড়িয়া বাজারটি দূরে হওয়ায় আমাদের পানিভর্তি গাড়িটি নেওয়া হয়নি। এদিকে, স্থানীয় বাসিন্দারা আমাদের ভুল জায়গায় পানির পাম্প বসানোর সিদ্ধান্ত দেওয়ার ফলে পাম্পে কচুরিপানা বেজে গিয়ে পানি ওঠা বন্ধ হয়ে যায়। পরে আমতলী ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতা নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। তবে কীভাবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে তা এখনও জানা যায়নি।’
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজাহান বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যায়, বিদ্যুতের শর্টসার্কিটে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা হতে পারে। তবে এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।’